উদ্ধারকারী নৌকাটি আজ নিজেই উদ্ধারের অপেক্ষায়

জামালপুরে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হচ্ছে বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে উদ্ধারকারী নৌকা (রেসকিউ বোট)। অবহেলায় পড়ে থাকায় নৌকাটির গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের ফৌজদারি এলাকার জিলা স্কুলের পেছন পাশে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে নৌকাটি পড়ে রয়েছে। শহররক্ষা বাঁধের সি বি ব্লকের ওপর রয়েছে নৌকাটি। নৌকাটির ওপরের ছাউনি নেই। জানালা ভাঙা ও ওপরে একটি পানির ট্যাংক পড়ে রয়েছে। নৌকাটির চারপাশে ঝোপঝাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। একই অবস্থা নৌকাটির ভেতরেও। নৌকার বিভিন্ন অংশে মরিচা ধরেছে। ইঞ্জিনসহ মূল নৌকার ভেতরে পানি জমে রয়েছে।
স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগকবলিত এলাকার মানুষকে দ্রুততম সময়ে নিরাপদ স্থানে নেওয়া ও ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য দুর্যোগ মন্ত্রণালয় নৌকাটি বরাদ্দ দেয়। নৌকাটি বর্ষা মৌসুমে পানিতে ভেসে থাকে। আর শুকনো মৌসুমে নদের পাড়ে পড়ে থাকে। এভাবেই নষ্ট হচ্ছে নৌকাটি। এরইমধ্যে অনেকটাই ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে নৌকাটি। নৌকার অনেক যন্ত্রাংশও হয়তো খোয়া গেছে। যদি ব্যবহার বা যত্ন নেওয়া হতো, তাহলে সরকারি সম্পদটি রক্ষা পেত।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বন্যাকবলিত এবং উপকূলীয় জেলার জন্য ৬০টি উদ্ধারকারী নৌকা তৈরি করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। ২০২১ সালে আটটি নৌকা বিভিন্ন জেলায় হস্তান্তর করা হয়। পরবর্তী সময়ে ২০২২ সালে জামালপুরসহ আরও ৫২টি জেলায় নৌকাগুলো হস্তান্তর করে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। নৌকাগুলোর দৈর্ঘ্য ৫৪ ফুট ও প্রস্থ ১২ দশমিক ৫০ ফুট। ৮০ জন ধারণক্ষমতা সম্পন্ন নৌকাটি ঘণ্টায় ৭ নটিক্যাল মাইল গতিতে চলতে সক্ষম। এর মাধ্যমে বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগকবলিত এলাকার মানুষকে দ্রুত সময়ে নিরাপদ স্থানে নেওয়া যায়।
জামালপুরের পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর সেলিম জাগো নিউজকে বলেন, এই নৌকাটি দিয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে কয়েকবার ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করতে দেখেছি। তারপর কয়েক বছর ধরে ওই জায়গায় নৌকাটি পড়ে রয়েছে। এতে গুরুত্বপূর্ণ একটি রাষ্ট্রীয় সম্পদ অযত্নে নষ্ট করা হচ্ছে। দেখার কেউ নেই। এটাও এক ধরনের অপরাধ। দ্রুত সময়ের মধ্যে নৌকাটি রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন।
জামালপুর জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে নৌকাটি মেরামতের উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে।
এফএ/জেআইএম