দুই কোটি টাকার ব্রিজে পুরাতন রড ব্যবহারের অভিযোগ

আনোয়ার আল শামীম আনোয়ার আল শামীম , জেলা প্রতিনিধি গাইবান্ধা
প্রকাশিত: ১২:২৯ পিএম, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় বাদিয়াখালি হাফানিয়া-বটতলা সড়কের ব্রিজ নির্মাণে পুরাতন রড ব্যবহারের অভিযোগ উঠছে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। বিষয়টি স্থানীয়রা জানার পর ব্রিজ নির্মাণ কাজে বাধা দিলে চাঁদাবাজির মামলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।

উপজেলা এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, সাঘাটা উপজেলার হাফানিয়া-বটতলা সড়কের ২০ মিটার ব্রিজ পুনর্নির্মাণের জন্য ২ কোটি ১২ লাখ ৮২ হাজার ৮০২ টাকা ব্যয় ধরা হয়। কাজটি পায় নওগাঁর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স বসুন্ধরা হাউজ বিল্ডার্স অ্যান্ড দোয়েল এন্টারপ্রাইজ।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, গাইবান্ধা জেলার সঙ্গে বগুড়া জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও বেগবান করতে গাইবান্ধার বাদিয়াখালী থেকে সাঘাটা উপজেলার প্রাণকেন্দ্র বোনারপাড়া হয়ে বটতলা বাজার থেকে বরকোনা বাজার ও জুমারবাড়ী হয়ে সোনাতলা উপজেলার মাধ্যমে বগুড়ার সংযোগ সড়কটি সম্প্রসারণ প্রায় শেষ। এই রাস্তাটি সম্প্রসারণ করার ফলে রাস্তায় নির্মাণ করা আগের ব্রিজটি সরু হওয়ায় এলজিইডি ব্রিজটি প্রশস্ত করার করার কাজ দেন মেসার্স বসুন্ধরা হাউজ বিল্ডার্স অ্যান্ড দোয়েল এন্টারপ্রাইজ জেডিকে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও কাজে নিয়োজিত শ্রমিক সূত্রে জানা যায়, ব্রিজ নির্মাণে পুরোনো লোহার বিম, পোস্ট ও অন্যান্য লোহার মালামাল জোড়াতালি দিয়ে কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। বিষয়টি নজরে এলে স্থানীয়রা কাজ বন্ধ করে দেন।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

jagonews24

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ৩-৪ জন শ্রমিক কাজ করছেন। তারা পুরোনো লোহার পিলার মাটির নিচে পুঁতে দিচ্ছেন। কোনো ধরনের যন্ত্রপাতির সাহায্য ছাড়াই ঝুঁকি নিয়ে সনাতন পদ্ধতিতে পিলার পুঁতছেন শ্রমিকরা। এতে পুরোনো লোহা দিয়ে নির্মাণ কাজ ও শিডিউল অনুযায়ী কাজ না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

স্থানীয় যুবক নুর আলম বলেন, ব্রিজ নির্মাণে পুরাতন রড ব্যবহার করা হচ্ছে। আমরা এটি মেনে নিতে পারবো না। আমরা চাই সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ব্রিজটি নির্মাণ করা হোক।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

বটতলা বাজারের বাসিন্দা ইসমাইল হোসেন বলেন, ঠিকাদার যেন আমাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে ব্রিজ নির্মাণ করতে না পারে তাই আমরা মাঝে মাঝে খোঁজ খবর নিই। আমরা কয়েকদিন থেকে লক্ষ্য করছি এই ব্রিজ নির্মাণে নিম্ন মানের রড ব্যবহার করা হচ্ছে। এই রডগুলো জুমাবাড়ীর একটি ব্রিজ থেকে কম দামে নেওয়া হয়েছে।

jagonews

মথরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা জামান মিয়া বলেন, ভাঙাড়ির দোকান থেকে পুরাতন রড কিনে এই ব্রিজের গার্ডার তৈরি করেছে। আমরা বাধা দিলেও ঠিকাদার কথা শুনছে না। ইঞ্জিনিয়ারকে বললে শুধু বলে বিষয়টি দেখছি। আমরা এর প্রতিকার চাই।

বিজ্ঞাপন

ঠিকাদার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ব্রিজ নির্মাণে পুরাতন রড ব্যবহারের কোনো সুযোগ নেই। রডগুলো দীর্ঘদিন একটি সিমেন্টের গোডাউনে রাখা ছিল। তাই রং পরিবর্তন হয়ে মরিচা ধরছে।

সাঘাটা উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী নয়ন রায় বলেন, ব্রিজে পুরাতন রড ব্যবহারের কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি সরেজমিনে দেখে ব্যবস্থা নেবো।

এফএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।