শেরপুরে চোর আতঙ্ক, ৪ মাসে অর্ধশতাধিক চুরি

ইমরান হাসান রাব্বী ইমরান হাসান রাব্বী , শেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৪:৩২ পিএম, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়া একটি চুরির দৃশ্য

শেরপুরে আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলেছে চুরি। শহরের ব্যবসায়িক এলাকা থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের গরুর খামার—সব জায়গাতেই সংঘবদ্ধ চোর চক্রের দৌরাত্ম্য বাড়ছে। গত চার মাসে জেলায় অর্ধশতাধিক চুরির ঘটনা ঘটেছে। এতে চরম আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন ব্যবসায়ী ও খামারিরা।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, সিসিটিভি ফুটেজ ও লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছ থেকে কাঙ্ক্ষিত সহযোগিতা পাচ্ছেন না তারা।

বিজ্ঞাপন

সম্প্রতি শেরপুর শহরের কোরায়েশি প্লাজায় অবস্থিত মাহি টেলিকম নামের মোবাইলের দোকানে সংঘবদ্ধ চোরচক্র অভিনব কায়দায় তালা কেটে ৬১টি স্মার্টফোন চুরি করে নিয়ে যায়। তবে চুরি করে পালানোর সময় দুজনকে হাতেনাতে ধরে ফেলে পুলিশ। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চক্রের আট সদস্যকে আটক করা হয়। উদ্ধার করা হয় ৫৫টি মোবাইলফোন ও তালা কাটার সরঞ্জাম।

চোর আতঙ্কে শেরপুরের ব্যবসায়ী-খামারিরা

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

মাহি টেলিকমের স্বত্বাধিকারী কামরুজ্জামান মিন্টু বলেন, ‘চুরির ঘটনা আমাদের ব্যবসাকে হুমকির মুখে ফেলেছে। নিরাপত্তা জোরদার করা না হলে ব্যবসা করা কঠিন হয়ে যাবে।’

শেরপুর পৌর শহরের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক এলাকা মুন্সিবাজারে শেরপুর সেল বাজার নামের আরেকটি মোবাইলের দোকানে একই কায়দায় চুরির ঘটনা ঘটে। চোরেরা ২৫টি নতুন স্মার্টফোন চুরি করে নিয়ে যায়। পরে সিসিটিভি ফুটেজে চোরদের ছবি স্পষ্ট দেখা গেছে। তবে এ ঘটনায় এখনো কাউকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। শেরপুর সেল বাজারের স্বত্বাধিকারী মো. হাদিউল ইসলাম বলেন, ‘চুরির ঘটনায় আমরা সবাই আতঙ্কিত। আমাদের ব্যবসার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।’

চোর আতঙ্কে শেরপুরের ব্যবসায়ী-খামারিরা

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

শুধু শহরের দোকানপাটই নয়, জেলার গ্রামীণ এলাকাগুলোর গরুর খামারও এখন চোরদের মূল টার্গেট। পাকুড়িয়া এলাকার প্রান্তিক খামারি রহিজ উদ্দিন জানান, তার খামার থেকে তিনটি গরু চুরি হয়েছে। প্রায় দুই মাস পার হলেও চোরদের শনাক্ত করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তিনি বলেন, ‘গরু চুরি হলে আমাদের মতো ক্ষুদ্র খামারিদের বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে।’

জেলা শহরসহ বিভিন্ন এলাকায় এমন চুরির ঘটনা বেড়েই চলছে। জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে অন্তত ১০টি চুরির সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া গেছে। এসব ভিডিওতে দেখা যায়, নতুন নতুন কৌশলে চুরি করা হচ্ছে। প্রায় প্রতি রাতেই খামার থেকে ট্রাকে করে গরু চুরির ঘটনা ঘটছে, যা নিয়ে আতঙ্কিত খামারিরা। স্থানীয় এক খামারি বলেন, ‘আমরা নিজেরাই পাহারা দিচ্ছি, তারপরও চুরি থামছে না।’

চুরিরোধে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থতার কারণে জনমনে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি শেরপুরের নকলায় গরু চোর সন্দেহে ছয়জনকে গণপিটুনি দেন স্থানীয়রা। এতে ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত ও চারজন গুরুতর আহত হন। পরে পুলিশ এসে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।

বিজ্ঞাপন

জাগোনিউজের খবর পেতে ফলো করুন

শেরপুরের পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। চোরদের ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে টহল জোরদার করা হয়েছে।’

এসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।