বেড়েছে সবজি-মাছের দাম, স্থিতিশীল মাংস

ময়মনসিংহে এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে বেড়েছে মাছ ও সবজির দাম। এতে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন ও মধ্যম আয়ের লোকজন। ক্রেতাদের দাবি, সরবরাহ বেশি থাকলেও যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়াই দাম বাড়িয়েছেন বিক্রেতারা।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে শহরের মেছুয়া বাজার ঘুরে জানা যায়, গত সপ্তাহে যেসব রুই ও কাতলা ২৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে বর্তমানে এগুলো ২৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আকার বেধে মৃগেল ২১০-২৪০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ২২০-২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বেড়েছে পাঙ্গাশের দামও। গত সপ্তাহ পাঙ্গাশ ১২০-১৪০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ১৩০-১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাবদা ২০০-২৫০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ২৮০-৩৫০, তেলাপিয়া ১৩০-১৮০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ১৫০-২২০, রাজপুঁটি ১৫০-১৮০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ২০০-২২০, টাকি ৩৫০-৪০০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৩৫০-৫০০, ট্যাংরা ৩০০-৩৯০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৩৫০-৪০০, কৈ ২৮০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তবে কমেছে শিং মাছের দাম। গত সপ্তাহে শিং ৪০০-৪৬০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৩০০-৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া দুই কেজি ওজনের সিলভার কার্প ২০০ টাকা, দেড় কেজি ওজনের চাষের বাউশ ২৮০ টাকা ও অপরিবর্তিত অবস্থায় শোল ৫০০-৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে মাছ কিনতে আসা জহিরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, একটি বেসরকারি চাকরি করে পরিবারের ৬ সদস্যের মুখে আহার জোগাতে হয়। বছর ঘুরলেও বেতন বাড়ে না। তিনবেলা খেয়ে পড়ে কোনোরকমে সংসার চললেও আয় করতে পারি না। বাজারে এসেছিলাম তিন কেজি তেলাপিয়া কিনতে। এসে দেখি মাছের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও দাম বেড়েছে। এমতাবস্থায় দুই কেজি তেলাপিয়া কিনে নিয়ে চলে যাচ্ছি।
মাছ বিক্রেতা ছানোয়ার হোসেন বলেন, গত সপ্তাহের তুলনায় সরবরাহ কম। তাই দামও বেড়েছে। দাম বৃদ্ধিতে আমাদের কারসাজি নেই।
এদিকে সবজির বাজারে মটরশুঁটি ও বরবটি প্রতি কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে এখন ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া করলার দাম ২০ টাকা বেড়ে ৬০, মুলা ৫ টাকা বেড়ে ১৫, মিষ্টিকুমড়া ৫ টাকা বেড়ে ১৫ ও কচুরলতি ২৫ টাকা বেড়ে এখন ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া বাঁধাকপি ৫ টাকা বেড়ে ২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ফুলকপি ৫ টাকা বেড়ে ১৫ টাকা পিস ও লেবু ২৫ টাকা বেড়ে ৪০ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে।
তবে কমেছে টমেটো ও লাউয়ের দাম। টমেটো ৫ টাকা কমে ১৫ টাকা ও লাউ ৩০ টাকা পিস হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। আর শসা ৩০ টাকা কেজি, বেগুন ২০, গাজর ২৫ ও শিম ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সবজি কিনে বাড়ি ফিরছিলেন আব্দুল কাদির। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, বাজারে তরিতরকারির অভাব নেই। অনেকদিন যাবত সবজির দামে সন্তুষ্ট থাকলেও বর্তমানে সবজির দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে ক্রেতারা ঠকলেও লাভবান হচ্ছে বিক্রেতারা। ভ্রাম্যমাণ আদালত নিয়মিত অভিযান চালালে বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলে মনে করছি।
১৩ বছর যাবত এই বাজারে সবজি বিক্রি করেন আবু সাঈদ। তিনি বলেন, শীতের শুরু থেকে ধীরে ধীরে সব ধরনের সবজির দাম কমতে থাকে। ফলে ক্রেতারাও কম দামে সবজি কিনতে পারেন। তব গত এক সপ্তাহ ধরে শীতকালীন সবজির সরবরাহও কমেছে। তাই দাম বেড়েছে।
এদিকে অপরিবর্তিত দামে ব্রয়লার মুরগি ১৮০ টাকা, লেয়ার ৩৫০ ও সাদা কক ২৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। কমেছে সোনালি মুরগির দাম। সোনালি ১০ টাকা কমে ২৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অপরিবর্তিত দামে গরুর মাংস ৭৫০ ও খাসির মাংস এক হাজার ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ফার্মের মুরগির ডিম ৪৫, হাঁসের ডিম ৭৫ ও দেশি মুরগির ডিম ৮০ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে।
ময়মনসিংহের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে হাবীবা মীরা বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই কেউ ইচ্ছা করে দাম বাড়াতে পারবে না। বাজারে অভিযান চালানো হবে। সিন্ডিকেট করে কিংবা কোনো কারণ ছাড়াই ইচ্ছামতো পণ্যের দাম বাড়ানোর প্রমাণ মিললে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কামরুজ্জামান মিন্টু/জেডএইচ/জিকেএস