শুঁটকি মাছে স্বাবলম্বী হচ্ছেন টেকনাফের বাসিন্দারা

আধুনিক সুযোগ-সুবিধা তেমন পৌঁছায়নি। বড় বড় কলকারখানাও নেই। তারপরও থেমে নেই কক্সবাজারের টেকনাফের উপকূলীয় এলাকার মানুষের জীবনযুদ্ধ। তারা সামুদ্রিক মাছ সংগ্রহ করে শুঁটকি বানিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। এতে স্বাবলম্বীও হচ্ছেন। পরিবারের খরচ জোগাচ্ছেন। এ কাজে পুরুষদের পাশাপাশি এগিয়ে এসেছেন নারীরাও। বড় পরিসরে না হলেও ক্ষুদ্র পরিসরে কাজ করছেন তারা।
টেকনাফে গিয়ে দেখা যায়, সাবরাং, শাহপরীর দ্বীপ ও মেরিন ড্রাইভ সড়কের পাশে গড়ে উঠেছে শুঁটকিপল্লি। এসব পল্লিতে বাঁশের ছাউনি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে মাচা। এসব মাচায় ছোট-বড় সামুদ্রিক মাছ কিনে এনে শুকানো হয়। এর মধ্যে রয়েছে পোপা, ছুরি, শামলা, লইট্টা, পাইচ্চা, ছাপা এবং চিংড়ি মাছ। এগুলো ১০ দিনের মধ্যে পুরোপুরি শুকিয়ে যায়।
এরপর হ্নীলা, হোয়াইক্যং, টেকনাফ, কুতুপালং, পালংখালী, কোট বাজার ও কক্সবাজারের শুঁটকির দোকানে বিক্রি করা হয়। কম দামে কাঁচা মাছ কিনে শুঁটকি বানিয়ে বিক্রি হয় বেশি দামে।
শামলাপুরের ফজল কাদের বাবু বলেন, আমার এখানে সাগরের বিভিন্ন জাতের পোপা মাছ, ছুরি মাছ, পাইচ্চা মাছ, পাতা মাছ ও চিংড়ি মাছ শুকানো হয়। এখানে চার-পাঁচজন লোক কাজ করেন। তারা নিজেদের খরচসহ পরিবারেরও খরচ চালাচ্ছেন। সব মিলিয়ে শুঁটকি মাছে অর্ধ থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত লাভ হয়।
- আরও পড়ুন
- যে পদ্ধতিতে উৎপাদন হবে বিষমুক্ত শুঁটকি
- কুয়াকাটায় শুটকির সম্ভাবনা
- কদর বেড়েছে পাবনার শুঁটকির, রপ্তানি হচ্ছে বিদেশে
- সেন্টমার্টিনের বালুতে শুঁটকি হয় যেভাবে
শাহপরীর দ্বীপের কবির আহমেদ বলেন, সামুদ্রিক কাঁচা পোপা মাছ ২০০-৩০০ টাকা কেজি দরে কিনে শুকিয়ে শুঁটকি বানাই। এরপর এই শুঁটকি ৫০০-৭০০ টাকায় বিক্রি হয়। এভাবে সামুদ্রিক বিভিন্ন জাতের মাছ কম দামে কিনে শুঁটকি বানিয়ে বেশি দামে বিক্রি করছি। সাত বছর ধরে শুঁটকি বিক্রি করছি। তবে এই কাজে কষ্ট করতে হয়। তবুও হালালভাবে টাকা পাচ্ছি।
এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বলেন, উপকূলীয় অধিকাংশ লোকজন শুঁটকি মাছের ব্যবসা করে লাভবান হচ্ছেন। আমাদের পক্ষ থেকে তাদের পরামর্শ ও সহযোগিতা দেওয়া হয়। তারা সামুদ্রিক কাঁচা মাছ সংরক্ষণ করে সপ্তাহ ১০ দিন শুকিয়ে বিক্রি করছেন। এটি ভালো উদ্যোগ।
জাহাঙ্গীর আলম/জেডএইচ/জিকেএস