চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
পোষ্য কোটা বাতিলসহ ৯ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের অনশন
পোষ্য কোটা বাতিল ও জুলাই আন্দোলনে হত্যাকারীদের বিচারসহ ৯ দফা দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীরা। বুধবার (৮ জানুয়ারি) সকাল ১২টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে অনশনে বসেন। এসময় অনেক শিক্ষার্থীকে তাদের দাবির সঙ্গে সংহতি জানাতে দেখা যায়।
অনশনে বসা ছয় শিক্ষার্থী হলো, জুলাই আন্দোলনে চোখ হারানো শিক্ষার্থী মো. শুভ হোসেন, সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি, রশিদ দিনার, তানিম মুশফিক, রিয়াদ, সাইরিব রহমান সুপ্ত।
তবে অনশনে বসা শিক্ষার্থীদের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন তারা। এর আগে কয়েকদিন ধরে ৯ দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা।
তাদের দাবিগুলো হলো, ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ফি ২০০ টাকা করতে হবে, মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনি কোটা, পোষ্য কোটাসহ সব ধরনের অযৌক্তিক কোটা বাতিল করতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য স্বাস্থ্য বীমা চালু করতে হবে, বন্ধ হলগুলোতে শিক্ষার্থীদের আর্থিক অবস্থা, বাড়ির দূরত্ব এবং মেধার ভিত্তিতে আসন বরাদ্দ ও অতিদ্রুত নতুন দুটি হল নির্মাণ করতে হবে, ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল এক্সট্রা কারিকুলার সংগঠনসমূহকে অফিস বরাদ্দ দিতে হবে, অনতিবিলম্বে টিএসসি নির্মাণ করতে হবে, অতি দ্রুত চাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন দিতে হবে, প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে প্রাতিষ্ঠানিক ই-মেইল প্রদান ও অনলাইনে রেজাল্ট প্রকাশসহ যাবতীয় কর্মকাণ্ড অনলাইনভিত্তিক করতে হবে এবং সম্প্রতি ঘটে যাওয়া গুপ্ত হামলার সুষ্ঠু বিচার ও ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
অনশনে বসা জুলাই আন্দোলনে এক চোখ হারানো শিক্ষার্থী মো. শুভ হোসেন বলেন, পৌষ্য কোটা সম্পূর্ণ একটি অযৌক্তিক কোটা। এ কোটার কারণে মেধাবী শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়ছে। জুলাই আন্দোলনে আহতরা এখনও কাতরাচ্ছে। কিন্তু হত্যাকারীদের কোনো উল্লেখযোগ্য বিচার হয়নি। ৯ দফা দাবিতে আমরা অনশন করছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা এ কর্মসূচি চালিয়ে যাবো।
অনশনরত শিক্ষার্থী সাইরিব রহমান সুপ্ত বলেন, জুলাইয়ের অভ্যুত্থান আহত-নিহতদের বিচার চাই। পৌষ্য কোটাসহ ৯ দফা দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেছি। যতদিন এসব দাবি বাস্তবায়ন না হবে ততদিন এ অনশন চলবে।
উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন বলেন, আমি শিক্ষার্থীদের এসব দাবির প্রতি একাত্মতা পোষণ করছি। শিক্ষার্থীরা যে এভাবে অনশন করছে সেটা আমাদের জন্য ব্যর্থতা। আমরা সবাই মিলে বসে একটা সিদ্ধান্ত নিতে পারি। যারা জুলাই গণঅভ্যুত্থান হামলার সঙ্গে জড়িত সবার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের স্থান মাটিতে নয় তোমাদের স্থান আমাদের বুকে।
উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান বলেন, যারা আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জুলাই আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীরা এমন কেউ যদি পড়াশোনা শেষ করে চলে যায় তবুও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন যেমন সার্টিফিকেট দিতে পারে তেমনি আবার সার্টিফিকেট বাতিলও করতে পারে। আমি কোনো ধরনের কোটার পক্ষে নেই। আমরাও চাই যাতে কোনো প্রকার কোটা না থাকে। তবে সমস্ত কিছুর একটা প্রক্রিয়া আছে আমাদের তোমরা সময় দাও আমরা সব সমস্যার সমাধান করবো।
আহমেদ জুনাইদ/আরএইচ/এমএস