রাবির ভর্তি পরীক্ষা

কর্মচারীরা পাবেন ১ শতাংশ পোষ্য কোটা, মানতে নারাজ শিক্ষার্থীরা

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক রাবি
প্রকাশিত: ০৯:২০ এএম, ০২ জানুয়ারি ২০২৫

শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে আসন্ন ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের সন্তানদের কোটা বাতিল করে কেবল সহায়ক ও সাধারণ কর্মচারীদের সন্তানের জন্য ১ শতাংশ কোটা পুনর্নির্ধারণ করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছেন শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (১ জানুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত ভর্তি কমিটির জরুরি সভায় এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। কমিটির সভাপতি উপাচার্য প্রফেসর সালেহ্ হাসান নকীব সভায় সভাপতিত্ব করেন।

কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আসন্ন ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় কেবল সহায়ক ও সাধারণ কর্মচারীদের পুত্র-কন্যাদের জন্য ১ শতাংশ কোটা রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এতে শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের সন্তানদের কোটা বাতিল করা হয়েছে।

তবে বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সকাল ১০টার ভেতর এই ১ শতাংশও বাতিল না করলে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ১০টায় সকল প্রশাসনিক ভবনে তালা মারার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার। বুধবার রাত ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটে এক লিখিত বক্তব্যে তিনি এসব কথা জানিয়েছেন।

লিখিত বক্তব্যে সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, আপনারা জানেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের প্রাথমিক সিলেকশন শুরু হতে যাচ্ছে আগামী ৫ জানুয়ারি। তাই আমরা ফাইনাল একটি সিদ্ধান্তে আসার জন্য ৭ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম ২ জানুয়ারি পর্যন্ত। তার প্রেক্ষিতে বুধবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। আমরা তাদের ১% কোটা রাখার সিদ্ধান্তকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি এবং আমরা আমাদের আল্টিমেটামের ওপরই অনড় আছি।

তিনি আরও বলেন, প্রশাসনের কাছে এখনো ১৫ ঘণ্টা সময় আছে তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার। বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সকাল ৯টা ৫০ মিনিটের আগে প্রশাসন পোষ্য কোটা বাতিলসহ ৩টি দাবি আদায়ে সহযোগিতা না করলে ৯টা ৫১ মিনিট থেকে ১০টা পর্যন্ত সময় দেওয়া হবে প্রশাসনিক ভবন ত্যাগ করার জন্য। তারপর অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রশাসনিক ভবনে ভালা দেওয়া হবে। সঙ্গে সব শিক্ষার্থীদের প্রতি অনুরোধ থাকবে আপনারা ক্লাস বন্ধ করে সংস্কার কাজে অংশগ্রহণ করবেন।

আন্দোলন দমাতে সাময়িক এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কি না প্রশ্নে তিনি বলেন, আমাদের আন্দোলনকে সাময়িকভাবে বন্ধ করার জন্য প্রশাসন এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কারণ আমাদের দাবি ছিল আজীবনের জন্য এই কোটা বাতিল করা। কিন্তু তারা তা করেনি।

আমাদের তিনটি দাবি হলো- পোষ্য কোটা আজীবনের জন্য বাতিল করতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয়ে চিহ্নিত ফ্যাসিস্ট শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসন থেকে মামলা দিতে হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে, কেন চিহ্নিত দুই ফ্যাসিস্ট শিক্ষককে সহকারী প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলো তার ব্যাখ্যা জনসম্মুখে এসে দিতে হবে রেজিস্ট্রারকে।

এসময় সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মোহা. ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, ভর্তি কমিটি মনে করেছে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের সন্তানদের এক পার্সেন্ট কোটা রাখা যৌক্তিক। নানা কারণে তারাও বঞ্চিত। যদিও তারা অনগ্রসর না। তবে অন্তত কিছুটা হলেও তারা পিছিয়ে পড়া। তাদের যে ইনকাম তাতে তাদের সন্তানদের বাইরে পড়ানো সম্ভব না। মানবিক কারণে তাদের এক পার্সেন্ট কোটা রাখা হয়েছে। আমি শিক্ষার্থীদের অনুরোধ জানাচ্ছি তারা যাতে এই দাবিটি মেনে নেন।

মনির হোসেন মাহিন/এফএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।