গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট
পুনর্বাসন না করে রিকশা উচ্ছেদ চলবে না
উপযুক্ত পুনর্বাসন ছাড়া অটোরিকশা শ্রমিকদের উচ্ছেদ করা চলবে না বলে দাবি জানিয়েছেন গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের নেতারা।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রিকশাচালকদের আন্দোলনে লাঠিচার্জ এবং পুনর্বাসন না করে তাদের হয়রানি বন্ধের প্রতিবাদে মশাল মিছিল ও বিক্ষোভ থেকে এ দাবি জানানো হয়।
সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে মশাল মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি কলাভবন-শ্যাডো-মধুর ক্যান্টিন-কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এরপর শাহবাগ ঘুরে রাজু ভাস্কর্যে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।
মশাল মিছিলে জোটের নেতাকর্মীরা ‘শ্রমিক যখন না খেয়ে মরে—পুলিশ তখন লাঠি মারে’, ‘পুনর্বাসন না করে—রিকশা বন্ধ চলবে না’, ‘যেই হাত শ্রমিক মারে—সেই হাত ভেঙে দাও’ স্লোগান দেন।
আরও পড়ুন
- ঢাকা মহানগরে তিনদিনের মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের নির্দেশ
ঢাকার সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের অবরোধ, তীব্র যানজট
মিছিল শেষে জোটের অন্যতম নেতা বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক জাবির আহমেদ জুবেলের সঞ্চালনায় জোট নেতারা বক্তব্য রাখেন। সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের সমন্বয়ক সালমান সিদ্দিক বলেন, অটোরিকশা শ্রমিকরা যারা আন্দোলন করেছেন তারা একটি যৌক্তিক দাবি নিয়ে মাঠে নেমেছে। একটি গণতান্ত্রিক দেশে মানুষ তাদের ন্যায়সঙ্গত দাবি নিয়ে আন্দোলন করবে, কথা বলবে। কিন্তু আমরা দেখলাম রিকশা শ্রমিকদের ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনে পুলিশ এবং সেনাবাহিনী লাঠিচার্জ করেছে।
তিনি বলেন, লাঠিচার্জ করে অসংখ্য রিকশা শ্রমিককে আহত করা হয়েছে। এই সরকার একটা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু এই সরকারের কোনো সিদ্ধান্তই জনগণের পক্ষে যাচ্ছে না। এর আগে বকেয়া বেতনের দাবিতে গার্মেন্টস শ্রমিকরা যখন আন্দোলন করেছে তখনও পুলিশ এবং সেনাবাহিনী তাদের ওপর অত্যাচার করেছে। শ্রমিকরা যখন ন্যায্য দাবিতে আন্দোলন করে তখন বলা হয়, শ্রমিকরা আওয়ামী লীগের বেশে ফিরে এসেছে। আমরা আজকের সমাবেশ থেকে এই ঘৃণ্য হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
আহমেদ জুবেল বলেন, অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম, এই সরকার দেশের সিংহভাগ মানুষের পক্ষে অবস্থান নেবে। কিন্তু এই রাজু ভাস্কর্যে শ্রমিকদের পক্ষে আমাদের বারবার দাঁড়াতে হয়েছে। ঢাকা শহরে প্রায় ২০ লাখ রিকশা শ্রমিক আছেন। তাদের বিষয়টি কোনো বিবেচনায় না নিয়ে যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় তখন এর ভুক্তভোগী হয় এদেশের জনগণ। আমরা বলতে চাই, কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে এই শহরে যে রিকশা চালকরা আছেন তাদের সঙ্গে আগে বৈঠক করেন।
আরও পড়ুন
তিনি বলেন, রিকশা শ্রমিকরা যখন আন্দোলনে নামলেন তখন তাদের বলা হলো, ‘হাইকোর্ট বলেছেন, তাই আপনারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হন’। এমন কথা তো জুলাই আন্দোলন চলাকালীন আওয়ামী লীগও বলেছিল যে হাইকোর্ট রিট করেছে। তখন আমরা আন্দোলনকারীরা বলেছিলাম, আমাদের হাইকোর্ট দেখাবেন না। আমরা রাজপথে আছি, রাজপথেই সমাধান হবে।
‘আজকে শিক্ষিত সম্প্রদায় আবারও বলছে হাইকোর্টে যান। আমরা বলতে চাই, রিকশা চালকদের হাইকোর্ট দেখালে চলবে না। তাদের যে দাবি সেটা তাদের সঙ্গে কথা বলেই সমাধান করতে হবে’- বলেন আহমেদ জুবেল।
এমএইচএ/এমকেআর/জেআইএম