ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
র্যাগ দেওয়ায় ৬ শিক্ষার্থীকে মধ্যরাতে থানায় সোপর্দ
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) র্যাগ দেওয়ার সময় ছয় শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে অন্য শিক্ষার্থীরা।
সোমবার দিবাগত (১৮ নভেম্বর) মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের লালন শাহ হলের ৩৩০ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
অভিুযুক্ত শিক্ষার্থীরা হলেন- ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের সাব্বির হোসেন, শেহান শরীফ শেখ, লিমন হোসেন, কান্ত বড়ুয়া, সাকিব খান এবং ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের একই বর্ষের সঞ্জয় বড়ুয়া। তারা একই বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করেছে বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন।
জানা যায়, ফিন্যান্স বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের কয়েকজনকে রাত সাড়ে ৯টার দিকে দেখা করতে বলেন অভিযুক্ত শেহান। পরে তাদেরকে লালন শাহ হলের ৩৩০ নম্বর রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। একপর্যায়ে ভুক্তভোগী চারজনকে রেখে অন্যদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর চারজনের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে অভিযুক্তরা। রাত ১২টার দিকে খবর পেয়ে হলের অন্য সিনিয়র শিক্ষার্থীরা অভিযুক্তদের হাতে নাতে ধরে। পরে প্রক্টর ও প্রভোস্টের নির্দেশনা অনুযায়ী মধ্যরাতে তাদের ক্যাম্পাসস্থ থানা পুলিশের হেফাজতে দেয়।
ভুক্তভোগীরা জানান, এর আগে গত ১৬ নভেম্বর রাতেও নবীন ব্যাচের ১২ শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাস পার্শ্ববর্তী সাদী অ্যান্ড হাদী ছাত্রাবাসে ডাকেন অভিযুক্তরা। তাদেরকে রাত আড়াইটা পর্যন্ত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়।
হলের সিনিয়র শিক্ষার্থী হাসানুল বান্না বলেন, আমার কাছে অভিযোগ এলে সেখানে গিয়ে দেখি, সাব্বির এবং সঞ্জয় দুজন মিলে ওদের র্যাগ দিচ্ছে। ঘটনা জিজ্ঞেস করলে তারা অস্বীকার করে। একপর্যাায়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের কয়েকজন বন্ধু ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তখন ভুক্তভোগীরা র্যাগ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতায় অভিযুক্তদের থানায় দেওয়া হয়।
ইবি থানার ডিউটি অফিসার এসআই মাসুদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন আমাদের কাছে ছয়জনকে নিয়ে এসেছে। পরে তাদেরকে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
লালন শাহ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আকতার হোসেন বলেন, ক্যাম্পাসের ভেতরে হওয়ায় রাতে অভিযুক্তদের পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে। অভিযুক্তরা আবাসিক শিক্ষার্থী না হওয়ায় হল প্রশাসন সরাসরি কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছে না। তবে ভুক্তভোগীদের লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করবে। র্যাগিংয়ের বিষয়ে আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি।
মুনজুরুল ইসলাম/এএইচ/জিকেএস