সলিমুল্লাহ খান
শিক্ষায় সমতা প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে খাদ্যের কথাও ভাবতে হবে
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান বলেছেন, অনেকেই মনে করেন ২৩ বছর পাকিস্তানি শাসনের কারণেই শিক্ষাক্ষেত্রে এখনো বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে আছে। আসলেই কি তাই? ভারতে কিন্তু পাকিস্তানি শাসন ছিল না, তাহলে ভারত পিছিয়ে কেন? কারণ ভারতে ৩০ কোটি লোক দুবেলা না খেয়ে থাকে। ফলে শিক্ষায় যদি আপনি সত্যিকারের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে স্বাস্থ্য ও খাদ্যের কথাও ভাবতে হবে।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ সিনেট ভবনে সেন্টার ফর হেরিটেজ স্টাডিজ আয়োজিত ‘ন্যায়সঙ্গত এবং গণতান্ত্রিক জাতীয় শিক্ষানীতির উপাদান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক গোলাম কিবরিয়া মেশকাত চৌধুরী। সভাপতিত্ব করেন সেন্টার ফর হেরিটেজ স্টাডিজ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদ।
অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘একজন ছাত্রকে প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত যদি দুবেলা শরীরে পুষ্টির জোগানই দিতে না পারেন তাহলে সে কীভাবে পড়বে? সেজন্য শিক্ষা মানুষের অধিকার হলে স্বাস্থ্যকে তার অন্তর্ভুক্ত করতেই হবে।’
এসময় তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা মানে কোনো অভিভাবক তার সন্তানকে বিদ্যালয়ে ভর্তি না করালে তাকে শাস্তির আওতায় আনা হবে। কিন্তু সেটি করার আগে আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সরকারি হিসাবে শতকরা ২০ জন হতদরিদ্র। তাদের আপনি শাস্তির আওতায় আনবেন কীভাবে? তাই যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি দরিদ্রতার হার কমিয়ে আনতে না পারছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে পারেন না।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব বলেন, ‘একটি দেশে সংহতি বজায় রাখতে ন্যায়বিচারটা জরুরি। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হলে কল্যাণকর রাষ্ট্রও প্রতিষ্ঠিত হয়। একটি রাষ্ট্র সত্যিকার অর্থেই যদি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হয়, তাহলে ভৌগোলিক অবস্থান যাই হোক না কেন, তার প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার একটি মৌলিক স্ট্যান্ডার্ড গড়ে তোলা হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে বৈষম্য কাম্য নয়। একটি জেলা স্কুল এবং সরকারি অন্য একটি স্কুলের মান সমান হতে হবে। তাহলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা গড়ে উঠবে।
আলোচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ বিভিন্ন বিভাগের তিন শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
মনির হোসেন মাহিন/এসআর/জিকেএস