যবিপ্রবির নৈশপ্রহরী ও শিক্ষার্থী বহিষ্কার


প্রকাশিত: ০১:৫১ পিএম, ০৪ মে ২০১৬

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) নৈশপ্রহরী বদিউজ্জামান বাদলকে চাকরি থেকে স্থায়ী ও জিইবিটি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী নাসির উদ্দীন বাদলকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। অপর চার শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় হল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

বুধবার দুপুরে যবিপ্রবির রিজেন্ট বোর্ডের ৩৪তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। যবিপ্রবি উপাচার্য প্রফেসর ড. আবদুস সাত্তারের সভাপতিত্বে রিজেন্ট বোর্ডের এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।  

যবিপ্রবি জনসংযোগ দফতরের সহকারী পরিচালক হায়াতুজ্জামান মুকুল জানান, বুধবার রিজেন্ট বোর্ডের ৩৪তম বিশেষ সভায় এক কর্মচারী ও পাঁচ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। রিজেন্ট বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং (জিইবিটি) বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী নাসির উদ্দীন বাদলকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে জৈষ্ঠ্য নিরাপত্তা প্রহরী বদিউজ্জামান বাদলকে চাকরি থেকে স্থায়ী বহিস্কারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

পাশাপাশি মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের শিক্ষার্থী কামরুজ্জামান কামালকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এক বছর বহিষ্কার সুপারিশের পরিবর্তে তাকে হল থেকে বহিষ্কার ও অভিভাবকের মুচলেকাসহ বিভাগের সুপারভাইজারের অনুমতিক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ ও দুই মাসের মধ্যে তার একাডেমিক থিসিসের কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারবে।

একইভাবে জিইবিটি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রাশিদুজ্জামান রাজনকেও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এক বছর বহিষ্কারের সুপারিশের পরিবর্তে তাকে হল থেকে বহিষ্কার ও অভিভাবকের মুচলেকাসহ বিভাগের সুপারভাইজারের অনুমতিক্রমে চতুর্থ বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। তবে এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স করতে পারবে না। আর মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের মাস্টার্সে শিক্ষার্থী রাসেল পারভেজ ও একই বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সাজেদুর রহমান শপুকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

যবিপ্রবি সূত্র জানায়, ২০১৫ সালের ১০ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় নৈশ প্রহরী বাদল ও তার বহিরাগত বন্ধুদের সঙ্গে শিক্ষাথীদের ক্যাম্পাসে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন করে। গত ৯ এপ্রিল রিজেন্ট বোর্ডে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে কর্মচারী বদিউজ্জামান বাদল ও শিক্ষার্থী নাসির উদ্দিন বাদলকে স্থায়ী বহিষ্কার এবং আরো চার শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তির সুপারিশ করা হয়। রিজেন্ট বোর্ড সুপারিশ গ্রহণ করে অভিযুক্তদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিয়ে পরবর্তী সভায় চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

কিন্তু আত্মপক্ষ সমর্থন না করে ১০ এপ্রিল থেকে শিক্ষার্থী বাদলসহ পাঁচজনের বহিষ্কারের সুপারিশ বাতিলের দাবিতে মাঠে নামে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল শিক্ষার্থী নাসির উদ্দিন বাদলসহ জনের বহিষ্কারের সুপারিশ ও শিক্ষার্থীদের নামে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।

একই সঙ্গে নৈশপ্রহরী বদিউজ্জামান বাদলকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করতে হবে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ১৭ দিনের মাথায় গত ২৬ এপ্রিল উপাচার্য অবরুদ্ধকে কেন্দ্র করে পুলিশের লাঠিচার্জে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় ক্যাম্পাস। বাধ্য হয়ে ওই দিন বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। এরপর বুধবার পরবর্তী সভা পর্যন্ত কোনো পক্ষই আত্মপক্ষ সমর্থন না করায় এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর আবদুস সাত্তারের সভাপতিত্বে রিজেন্ট বোর্ডের সভায় উপস্থিত ছিলেন, যশোর-৩ আসনে সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ, যশোর-৫ আসনের সংসদ সদস্য স্বপন ভট্টাচার্য, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হেলাল উদ্দিন, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর শেখ আবুল হোসেন প্রমুখ।

মিলন রহমান/এআরএ/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।