কুবিতে কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের মতবিনিময় সভায় হট্টগোল

ক্যাম্পাস প্রতিবেদক
ক্যাম্পাস প্রতিবেদক ক্যাম্পাস প্রতিবেদক কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: ১২:৩৪ এএম, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের মতবিনিময় সভা হয়েছে। মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুর দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের কনফারেন্স রুমে এই সভা হয়। সভায় বক্তব্য দেওয়াকে কেন্দ্র করে কুবি শিক্ষার্থীদের মধ্যে হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, মতবিনিময় সভার শুরুতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আবদুল কাদের কুবির সমন্বয়ক ও আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন। বক্তব্য শেষে উপস্থিত সবার জন্য মত প্রকাশের সুযোগ দেওয়া হয়। তখন আন্দোলনকারীদের মধ্যে থেকে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী বি এম সুমন তার মত প্রকাশ করেন।

একপর্যায়ে তিনি কুবির সমন্বয়কদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘সমন্বয়ক সমন্বয়ক খেলা বন্ধ করতে হবে। সমন্বয়ক সমন্বয়ক খেলা ছাত্রলীগেরই পুরোনো রূপ’- এসব কথা বলার পর তার বক্তব্য সংক্ষিপ্ত করতে বলা হয়। এতে বসে থাকা শিক্ষার্থী ও সমন্বয়করা দাঁড়িয়ে যান। পরে ফাহিম আবরার নামে আরেক শিক্ষার্থী মত প্রকাশ করতে গেলে বাগবিতণ্ডা ও হট্টগোল বেধে যায়। তখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন উপস্থিত কেন্দ্রীয় সমন্বয়করা।

মতবিনিময় সভায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী বি এম সুমন বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই আমি সম্পৃক্ত ছিলাম। আমি তথাকথিত আইন-কানুন ও স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের উদ্দেশ্যে করে তিনি বলেন, ‘আমাদের ক্যাম্পাসে উপাচার্য নাই, তাই ক্যাম্পাসে যেন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়-কেন্দ্রের যারা আছেন বিষয়টি দেখবেন।’

আন্দোলনকারী ফাহিম আবরার বলেন, ‘আমরা আন্দোলনে বিভিন্নভাবে জড়িত ছিলাম। আন্দোলনের জন্য আমি নিজে কার্টুন বানিয়েছি। লংমার্চে যাওয়ার জন্য একটা গ্রুপ খোলা হয়েছিল। সেখানে আমরা মাত্র তিন জন ভোরবেলা লংমার্চের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছি। গোলাগুলির সময় আমরা ঢাকা মেডিকেল কলেজের আইসিইউতে আটকা পড়েছিলাম।’

সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আবদুল কাদের বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কুবির ভূমিকা অপরিসীম। আন্দোলন যখন স্থগিত হয়ে যায়, তখন আপনারা এগিয়ে এসেছেন। আমাদের দায়িত্ব এখানেই শেষ না, দায়িত্ব অনেক বড়। আমাদের আন্দোলন একটি সিস্টেমের বিরুদ্ধে। দেশ পুনর্গঠনে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে লড়তে হবে। শহীদ ভাইয়েরা তাদের স্বপ্ন, প্রত্যাশা আমাদের কাছে আমানত রেখে গেছেন। আমরা সেভাবে কাজ করবো। আমাদের নিজেদের মধ্যে বিরোধ ভুলে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’

এই বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করে কুবির সমন্বয়ক মোহাম্মদ সাকিব হোসাইন বলেন, ‘আন্দোলনে কুমিল্লার ছাত্ররা মার খেয়েও পিছিয়ে যায়নি। আমাদের দেখে বাংলাদেশ জাগ্রত হয়েছে। কারও প্রতি অবিচার করার জন্য, কোনও কিছু চাপিয়ে দেওয়ার জন্য আমরা আন্দোলন করিনি। কথা বলাই শুধু বাকস্বাধীনতা না, শোনাও স্বাধীনতা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কুমিল্লা এগিয়ে ছিল। এতো কষ্ট করে অর্জিত স্বাধীনতা আমাদের এই জায়গায় প্রশ্নবিদ্ধ করবে আমি তা কারো কাছ থেকে আশা করিনি।’

এমআইএইচএস/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।