ইবির খালেদা জিয়া হল

বারবার বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা, শিক্ষক কোয়ার্টারে নেওয়া হলো ছাত্রীদের

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক ইবি
প্রকাশিত: ০৭:০৫ পিএম, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) খালেদা জিয়া হলের পুরোনো ব্লকে বারবার বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা ঘটছে। শেষ ছয় মাসে ছোট-বড় অন্তত ১০ বার বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা ঘটে। এরমধ্যে অন্তত পাঁচবার ঘটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা।

গত ৪ সেপ্টেম্বর শর্টসার্কিটের কারণে অগ্নিকাণ্ডে হঠাৎ বিদ্যুৎ বন্ধ হলে আতঙ্কে চারজন ছাত্রী অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এতে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে হলের ছাত্রীদের মধ্যে। নিরাপত্তা শঙ্কায় থাকা ছাত্রীদের পক্ষ থেকে এ সমস্যার সমাধান দাবি করা হয়। তবে ওই ভবনের বৈদ্যুতিক লাইনের সংস্কার সময়সাপেক্ষ হওয়ায় দুর্ঘটনা এড়াতে ছাত্রীদের জরুরি ভিত্তিতে পরিত্যক্ত শিক্ষক কোয়ার্টারে থাকার ব্যবস্থা করেছে কর্তৃপক্ষ। সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে প্রায় ১০০ ছাত্রী ‘কপোতাক্ষ’ নামের ওই কোয়ার্টারে ওঠেন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন বড় ধরনের সংস্কার না হওয়ায় হলের বৈদ্যুতিক লাইন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। প্রতিবার দুর্ঘটনার পর কোনোরকম নামমাত্র সংস্কার করা হয়। ফলে স্থায়ী সমাধান না হওয়ায় বারবার দুর্ঘটনা ঘটছে। গত ৭ জুলাই রাত ১০টার দিকে হলে শর্টসার্কিটের কারণে আগুন লাগে। পুরো দুই ঘণ্টা কাজ করে ইলেকট্রিশিয়ানরা লাইন ঠিক করে যান। পরের দিন ভোর সাড়ে ৬টায় আবারও আগুন লাগে।

১০ জুলাই আবারও সমস্যা সৃষ্টি হলে বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং পুরো রাত রাত হলটি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকে। এরপর ১৭ জুলাই পর্যন্ত কাজ করে লাইন ঠিক করা হয়। এসময় হলের তিনতলা পর্যন্ত বৈদ্যুতিক সংযোগ মেরামত করার কথা থাকলেও দোতলা পর্যন্ত করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় মেরামতের নামে শুধু জোড়াতালি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ হলের ছাত্রীদের। ফলে দেড়মাস পর ২ ও ৫ সেপ্টেম্বরও একই সমস্যা দেখা দেয়।

এ নিয়ে ওই হলের ছাত্রীদের মাঝে চরম অসন্তোষ দেখা দেয়। এরপর স্থায়ী সমাধানের দাবিতে সোচ্চার হন ছাত্রীরা। তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কারীদের সঙ্গে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি আর্থিক ও প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক ড. আ ব ম সিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী ও হলের আবাসিক শিক্ষকদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠকে বসেন। সেখানে উভয় পক্ষের আলোচনায় বৈদ্যুতিক সমস্যা স্থায়ী সমাধানের আগ পর্যন্ত পরিত্যক্ত কোয়ার্টারে ছাত্রীদের অবস্থানের সিদ্ধান্ত হয়। সে অনুযায়ী সোমবার কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনায় জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে ছাত্রীরা কোয়ার্টারে ওঠেন।

ইবির খালেদা জিয়া হল/ বারবার বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা, শিক্ষক কোয়ার্টারে নেওয়া হলো ছাত্রীদের

খালেদা জিয়া হলের আবাসিক শিক্ষক ড. এরশাদুল হক বলেন, ‘আমরা এখানে (কোয়ার্টারে) শতাধিক ছাত্রীর আবাসন ব্যবস্থা করেছি। তাদের নিরাপত্তার জন্য সার্বক্ষণিক আনসার ও আয়া নিয়োজিত থাকবে।’

তাদের খাবারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হলের ডাইনিং থেকে তাদের জন্য প্রতিবেলায় খাবার এখানে নিয়ে আসা হবে। আশা করি তাদের কোনো ধরনের সমস্যা হবে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী এ কে এম শরীফ উদ্দীন বলেন, কোয়ার্টারে মোটামুটি সব রুমের বিদ্যুৎ সেবা নিশ্চিত করা হয়েছে। হলের পুরাতন ব্লক সংস্কারের জন্য ৪৮ লাখ টাকার মতো লাগবে বলে জেনেছি। বাজেট পাওয়ার পর দ্রুতই কাজ শুরু করা হবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি প্রশাসনিক ও আর্থিক দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক ড. আ ব ম সিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী বলেন, হলের সমস্যা দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। আশা করছি খুব দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

মুনজুরুল ইসলাম/এসআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।