ছাত্রলীগ নেতা সন্দেহে ২ যুবককে ঢাকা কলেজে ধরে এনে মারধর
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে গত ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রদের উদ্দেশ্যে গুলি ছুড়েন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা হাসান মোল্লা। রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকা থেকে সেই হাসান মোল্লা সন্দেহে এক যুবককে ধরে এনে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে মারধর করা হয়। জানা গেছে, মারধরের শিকার ওই যুবকের নাম শাওন। তিনি নিউমার্কেটের একটি হোটেলের ম্যানেজার। পরে শাওনকে ছাড়াতে আসলে তার বন্ধু সুমনকেও মারধর করে শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) দুপুর ৩টার পর ঢাকা কলেজ ক্যাম্পাসে এই ঘটনা ঘটে। এদিকে মারধরের শিকার ওই যুবক ছাত্রলীগের কর্মী না বলে মোবাইল ফোনে নিশ্চিত করেন ঢাকা কলেজের সাবেক কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী।
আরও পড়ুন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘর্ষে কে এই অস্ত্রধারী যুবক?
ঘটনার সময় উপস্থিত থাকা কয়েকজন জাগো নিউজকে জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গুলি ছোড়া ছাত্রলীগের সাবেক নেতা হাসান মোল্লার সঙ্গে মারধরের শিকার ওই যুবকের চেহারার কিছুটা মিল আছে। শিক্ষার্থীরা তাকে ধরে এনে মারধর করার সময় বারবার নিজেকে নির্দোষ দাবি করছিলেন তিনি। কিন্তু শিক্ষার্থীরা তার কোনো কথাই শোনেনি। পরে সুমন নামে তার এক বন্ধু তাকে ছাড়াতে আসলে তাকেও মারধর করে শিক্ষার্থীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মারধরের পর শাওনকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখে শিক্ষার্থীরা। এসময় ঢাকা কলেজের কয়েকজন শিক্ষক ঘটনাস্থলে আসলেও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা না বলেই শিক্ষার্থীরা ওই দুই যুবককে মারধর করতে থাকেন। পরে কলেজ ক্যাম্পাসে পুলিশ আসলে পুলিশকে উদ্দেশ্য করে শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া, ভুয়া’ স্লোগান দিতে থাকে। পরে বিকেল ৫টার পর ওই দুই যুবককে সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ঢাকা কলেজের দক্ষিণ হলের তত্ত্বাবধায়ক আনোয়ার মাহমুদ বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা দুই যুবককে ধরে এনে মারধর করে। যতটুকু জানতে পেরেছি যেই ব্যক্তি সন্দেহে ওই দুই যুবককে ধরে এনেছিল তারা সেই ব্যক্তি না। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হলে পুলিশ আসে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা পুলিশের কাছে তাদের ছাড়েনি। পরে আমি সেনাবাহিনীকে খবর দেই। সেনাবাহিনী এসে ওই দুই যুবককে নিয়ে যায়।’
এর আগে গত ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে গুলি ছোড়েন হাসান মোল্লা। তিনি ঢাকা কলেজের ২০০৭-০৮ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ছিলেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাসান মোল্লা নামের ওই যুবক ঢাকা কলেজের ছাত্রাবস্থায় থাকতেন কলেজের আখতারুজ্জামান ইলিয়াস হলে। ছাত্রজীবনের শুরুতেই ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেনের কমিটিতে কেন্দ্রীয় সহ-সম্পাদক পদে ছিলেন।
ঢাকা কলেজ ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক কয়েকজন নেতা গত ১৫ জুলাই দিনগত রাতে জাগো নিউজকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছিলো।
এনএস/এমআইএইচএস