ছাত্রীকে যৌন হয়রানি : আহসান উল্লাহর সেই শিক্ষক সাময়িক বহিষ্কার


প্রকাশিত: ০৮:৫৩ এএম, ৩০ এপ্রিল ২০১৬

যৌন নিপীড়ন ও শিক্ষার্থীদের হয়রানির অভিযোগে রাজধানীর তেজগাঁওস্থ আহসান উল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ত্রিপল-ই বিভাগের অভিযুক্ত শিক্ষক মাহফুজুর রশিদ ফেরদৌসকে সাময়িক বরখাস্ত (সাসপেন্ড) করা হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ও আন্দোলনের প্রেক্ষিতে শনিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তবে শুধু সাময়িক অপসারণ নয় স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করার দাবিতে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ঘোষিত আল্টিমেটাম থেকে পিছিয়ে আসেনি শিক্ষার্থীরা। যতক্ষণ পর্যন্ত ওই অভিযুক্ত শিক্ষককে চাকরিচ্যূত করা না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে বলেও জানান তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য (ভিসি) এএমএম সাইফুল্লাহ জাগো নিউজকে বলেন, ওই শিক্ষককে সাসপেন্ড করা হয়েছে। এখন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক, প্রক্টরিয়ালসহ কোনো বিষয়ে আর থাকতে পারবেন না তিনি। এমনকি ক্লাশ নিতেও পারবেন না তিনি।

ভিসি বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী গঠিত তদন্ত কমিটি শিক্ষার্থীদের এ যৌন নিপীড়ন ও শিক্ষার্থীদের হয়রানির অভিযোগ তদন্ত করবেন। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একজন চেয়ারম্যান ও একজন মেম্বার অব ট্রাস্টিসহ ৯ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি রয়েছে। খুব শিগরিরি তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

স্থায়ী ভাবে চাকরিচ্যুত করণের বিষয়ে শিক্ষার্থীরা যে আল্টিমেটাম দিয়েছেন সে সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে যতো টুকু করার ক্ষমতা রয়েছে তা করেছি। সাসপেন্ড করেছি। স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করতে গেলে সিন্ডিকেট এর পারমিশন লাগবে। মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

এর আগে অভিযুক্ত শিক্ষক ফেরদৌসকে অপসারণের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শনিবার সকাল ১০টা থেকে ক্লাশ বর্জন করে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করে।

বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা জানান, ত্রিপল-ই বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর মাহফুজুর রশিদ ফেরদৌস বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টরের দায়িত্বেও রয়েছেন। তিনি প্রক্টরিয়াল ক্ষমতা ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। ছাত্রীদের নানাভাবে যৌন হয়রানি করেন। বিভাগের নিজের কক্ষে ডাকেন। না আসলে মার্কস কম দেয়ার হুমকিও দিয়েছেন।

এর আগে তার পাতানো ফাঁদে পড়ে একই বিভাগের শিক্ষককে অগত্যা চলে যেতে হয়েছে। তারাও বলেছেন তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ ও যৌন হয়রানির সঙ্গে যুক্ত।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ওই শিক্ষক সম্প্রতি একই বিভাগের এক ছাত্রীকে ট্রেজারারের কক্ষে জোর করে কেন অভিযোগ করা হয়েছে সে ব্যাপারে জানতে চান। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে শিক্ষার্থীরা গত সপ্তাহে লিখিতভাবে বিভাগীয় চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ করেন। কিন্তু অভিযোগের প্রেক্ষিতে কোনো ধরনের ব্যবস্থা না নেয়ায় আজ শনিবার সকাল থেকে আন্দোলনে নামে তারা।

ত্রিপল-ই বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষার্থীরা জানান, বিকেল ৩টা পর্যন্ত আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে। লিখিতভাবে জানানোও হয়েছে। এর মধ্যে ওই শিক্ষককে এখান থেকে অপসারণ করার লিখিত সিদ্ধান্ত আমরা দাবি করেছি। নইলে ক্লাশ বর্জন করে আন্দোলন চলবে।

জেইউ/এসকেডি

 
জেইউ/এসকেডি/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।