শেকৃবিতে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের গণপিটুনি

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: ০৮:৫৫ পিএম, ১৩ আগস্ট ২০২৪

রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীকে বেধড়ক মারধর করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের পাকড়াও করে গণপিটুনি দেন।

সরকার পতনের পর থেকে কোনো ছাত্রলীগ নেতাকে ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেননি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। গত সোমবার (১২ আগস্ট) ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত ও আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া নেতাদের কক্ষ থেকে তাদের বেড ও জিনিসপত্র বের করে আগুন লাগিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। এসময় তাদের রুম থেকে বিভিন্ন অস্ত্র ও মাদক পাওয়া যায়।

মঙ্গলবার সকালে ছাত্রলীগ নেতা আলতাবুর ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা পাকড়াও করে গণপিটুনি দেন। পরে চুল কেটে গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেন তারা। এছাড়াও সাবেক ছাত্রলীগের নেতা এবং বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সেকশন অফিসার তারিক আহমেদ রুদ্র এবং উজ্জ্বল আহমেদকে গণপিটুনি দেন শিক্ষার্থীরা।

ছাত্রলীগকর্মী তরিকুল ইসলাম তুরান ক্যাম্পাসে এসে তার কক্ষে প্রবেশ করলে তল্লাশি চালান শিক্ষার্থীরা। এসময় বিভিন্ন ব্রান্ডের মদ জব্দ করে গণপিটুনি দেন তারা। কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় এসব ছাত্রলীগ নেতাকে সরাসরি অস্ত্রহাতে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে দেখা যায়।

এছাড়াও গণপিটুনি শিকার হয়েছেন শেকৃবি ভেটেরিনারি স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট রাহাত ইসলাম। প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, ব্যক্তিগত আক্রোশের জেরে জুনিয়র শিক্ষার্থীদের দ্বারা তাকে মারধর করানো হয়েছে। এটা তাদের কর্মসূচির অংশ ছিল না। তাদের ব্যানারকে কাজে লাগিয়ে একদল শিক্ষার্থী এটা করেছে।

শেকৃবিতে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের গণপিটুনি

এরপরই তৎক্ষণাৎ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়করা। এতে তারা উল্লেখ করেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে ক্যাম্পাসে একদল স্বার্থেন্বেষী গোষ্ঠী তাদের ব্যক্তিগত আক্রোশ ও উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। যার দায় কোনোভাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহযোদ্ধারা নেবে না।

তারা আরও উল্লেখ করেন, আমরা স্পষ্ট বলে দিতে চাই এ ধরনের অরাজক কাজের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা জড়িত নয়, ক্যাম্পাসের কেউ যদি পরবর্তীতে এ ধরনের কর্মকাণ্ডে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায় তার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক তৌহিদ আহমদ আশিক বলেন, ‘ছাত্রলীগের যারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করেছেন এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অস্ত্রহাতে নিয়েছিলেন তাদের কোনোভাবেই ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেওয়া হবে না। সাধারণ শিক্ষার্থীরা কঠোরহস্তে তাদের দমন করবে। এর বাইরে কেউ ব্যক্তিগত আক্রোশে মারধর করলে এর দায়ভার তাকেই নিতে হবে।’

তাসনিম আহমেদ তানিম/বিএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।