রোড মার্চের মধ্য দিয়ে শুরু হলো ‘রেজিস্ট্যান্স উইক’

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: ০৭:০৩ পিএম, ১৩ আগস্ট ২০২৪

‘প্রতিবিপ্লব’ ঠেকাতে চার দফা দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সপ্তাহব্যাপী ‘রেজিস্ট্যান্স উইক’ রোডমার্চ দিয়ে শুরু হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে একত্র হন শিক্ষার্থীরা। এরপর যেসব জায়গায় ছাত্র-জনতা শহীদ হয়েছেন সেসব পয়েন্ট অভিমুখে ‘রোডমার্চ’ কর্মসূচি পালন করেন তারা। রোডমার্চ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়া, ফুলার রোড হয়ে শহীদ মিনারে গিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন এবং শহীদদের স্মরণে দোয়া প্রার্থনা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

চার দফার প্রথম দুই দফা ঘোষণা করে আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, আমাদের আন্দোলনের এই রেজিস্ট্যান্স উইক কর্মসূচির দাবি চারটি। তার প্রথম দুই দাবি হলো- ফ্যাসিবাদী কাঠামো ব্যবহার করে ফ্যাসিস্ট হাসিনা এবং তার দল ও সরকার যে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, সেগুলোর দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে। দ্বিতীয় দাবিটি হলো- সংখ্যালঘুদের ওপর আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী মহাজোটের শরিক দলগুলোর পরিকল্পিত হত্যা, ডাকাতি ও লুণ্ঠনের মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থানকে বিতর্কিত করার প্রচেষ্টায় অংশগ্রহণকারীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং সংখ্যালঘুদের ন্যায্য দাবি মেনে নিতে হবে।

আরেক সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আমাদের তৃতীয় দাবি হলো- প্রশাসন ও বিচার বিভাগে যারা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হামলা, মামলা এবং হত্যাযজ্ঞকে বৈধতা দিয়েছে এবং ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বারবার কায়েমের চেষ্টা করছে, তাদের দ্রুততম সময়ে অপসারণ ও নতুন সরকারে তাদের নিয়োগ বাতিল করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। প্রশাসন ও বিচার বিভাগে যারা এতদিন বৈষম্যের শিকার হয়েছে, তাদের জন্য দ্রুততম সময়ে সুযোগের সমতা নিশ্চিত করতে হবে।

শহীদ মিনারে ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক আখতার হোসেন বলেন, আমাদের বিপ্লবকে নস্যাৎ করার জন্য প্রতিবিপ্লবের চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা এটিকে রুখে দিতে রেজিস্ট্যান্স উইক কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। আমরা ছাত্র-জনতা যে কোনো ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে প্রস্তুত। আমাদের শহীদ ভাইদের রক্তের বিনিময়ে যে গণঅভ্যুত্থান হয়েছে সেই অভ্যুত্থান আমরা যে কোনো মূল্যে রক্ষা করবো। দেশের বিভিন্ন জায়গায় ফ্যাসিবাদের দোসররা যতক্ষণ পর্যন্ত থাকবে, দেশের ছাত্র-জনতা ততক্ষণ পর্যন্ত রাজপথে অবস্থান করবে। আমাদের আগামীকালের কর্মসূচি সন্ধ্যার মধ্যে ঘোষণা করা হবে।

এসময় আরেক সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, আমরা দেখেছি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিভিন্ন জায়গায় কমিটি দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু এর সাথে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই, আমরা এখনো এই ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি। আমাদের আন্দোলন এখনো শেষ হয়নি। তাই আমাদের আন্দোলন সামনে এগিয়ে নিতে আপনারা চাইলে ভলান্টিয়ার কমিটি গঠন করতে পারেন। তবে সেখানে কোনো সমন্বয়ক বা সহ-সমন্বয়ক থাকবে না। সবাই ভলান্টিয়ার সেখানে। কমিটি ঘোষণা করবো কি না সেটা আমরা পরে জানাবো।

আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ‘আগামীকাল সরাদিন- খুনিদের মামলা দিন’, ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই- খুনি হাসিনার ফাঁসি চাই’, ‘বিচার বিচার বিচার চাই-গণহত্যার বিচার চাই’, ‘আমার ভাই কবরে-খুনি কেন বাহিরে’, ‘দিয়েছি তো রক্ত-আরও দেবো রক্ত’, ‘রক্তের বন্যায়-ভেসে যাবে অন্যায়’, ‘শহীদের রক্ত-বৃথা যেতে দেবো না’ স্লোগান দিতে শোনা যায়।

এমএইচএ/বিএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।