রুয়েটে রাজনীতি নিষিদ্ধসহ শিক্ষার্থীদের ১২ দাবি

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি রাজশাহী
প্রকাশিত: ০৫:৩২ পিএম, ১০ আগস্ট ২০২৪

সকল প্রকার দলীয় রাজনীতি বন্ধসহ ১২ দফা দাবি জানিয়েছেন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) শিক্ষার্থীরা। শনিবার (১০ আগস্ট) দুপুরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে রুয়েট ভিসি বরাবর পাঠানো এক চিঠিতে এসব দাবি জানানো হয়।

১২ দফা দাবি হলো

১. সকল প্রকার দলীয় রাজনীতি মুক্ত রুয়েট ঘোষণা করে বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে। প্রতিটি আবাসিক হল থেকে পৃথক পৃথকভাবে রাজনীতি মুক্ত ঘোষণা করে বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে। ভবিষ্যতে দলীয় রাজনীতি প্রবেশের সুযোগ করে দিতে পারে এমন অরাজনৈতিক সংগঠন গুলো যেমন- ছাত্র-সংসদ, শিক্ষক সমিতি, কর্মকর্তা সমিতি, কর্মচারী সমিতি ইত্যাদি কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে।

২. রুয়েটের সব প্রশাসনিক পদে নিয়োগকৃত শিক্ষক, হল প্রভোস্ট ও অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রভোস্ট, একদিনের মধ্যে অব্যাহতি দিয়ে পুনরায় শিক্ষার্থীদের পছন্দকৃত ছাত্রবান্ধব শিক্ষকদের নিয়োগ দিতে হবে। ইতোপূর্বে সংগঠিত সব প্রশ্নবিদ্ধ নিয়োগ দ্রুততম সময়ে তদন্তের মাধ্যমে বাতিল করতে হবে। একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক সংগঠনের নিয়োগপ্রাপ্তদের কয়েকজনকে অস্ত্র হাতে হামলা করতে বিভিন্ন ছবিতে দেখা গেছে। তাদের তিনদিনের মধ্যে স্থায়ী বহিষ্কার ঘোষণা করতে হবে।

৩. একদিনের মধ্যে গণহত্যার প্রতি নিন্দা ও ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানকে স্বাগত জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ থেকে স্পষ্ট ভাষায় বিবৃতি প্রকাশ করতে হবে। গণহত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের নামে কোন হলের নামকরণ করা যাবে না।

৪. আবাসিক হলগুলোর বর্তমান অ্যালোটমেন্ট বাতিল করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে পুনর্বিন্যাস করতে হবে।

৫. পরীক্ষার বিস্তারিত ফলাফল, হলে সিট কার নামে বরাদ্দ আছে ইত্যাদি তথ্য ওয়েবসাইটে নিয়মিত প্রকাশ করতে হবে। ক্লিয়ারেন্স, সেমিস্টার ফি, লাইব্রেরির জরিমানা, ডিপার্টমেন্টের বার্ষিক চাঁদা, আবাসিক হলের বিল, শিক্ষা শাখার বিভিন্ন কাগজপত্র, প্রোভিশনাল সার্টিফিকেট ইত্যাদি তিন মাসের মধ্যে অটোমেশন সিস্টেমের আওতায় আনতে হবে।

৬. রুয়েটের সব প্রকার টেন্ডার স্বচ্ছতার সঙ্গে বাস্তবায়ন করতে হবে। এর পাশাপাশি টেন্ডার এবং বাজেট বিষয়ক সব তথ্য ওয়েবসাইটে আপডেট করতে হবে।

৭. সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার ফলাফল পরবর্তী সেমিস্টার শুরু হওয়ার দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রকাশ করতে হবে। পরবর্তী এক মাসের মধ্যে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষায় রোলের পরিবর্তে কোডের ব্যবস্থা করতে হবে।

৮. রুয়েটের শিক্ষা শাখাসহ বিভিন্ন দপ্তর থেকে সেবা গ্রহণ করতে শিক্ষার্থী এবং অ্যালামনাইদের সমস্যা সমাধানে অভিযোগ বাক্স রাখতে হবে। কেউ লাঞ্ছনা বা অবহেলার প্রমাণ পেলে এক সপ্তাহের মধ্যে অভিযুক্ত ব্যক্তির শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

৯. রুয়েটে নির্মাণাধীন হলের সকল কাজ পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে সম্পূর্ণ করতে হবে এবং প্রশাসনিক ভবনগুলোর নির্মাণ কাজ পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে একটি স্থাপনা তৈরি করতে হবে। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে বসার জায়গা এবং পাবলিক টয়লেট তৈরি করতে হবে। খাবারের দোকান সমূহের জন্য স্থায়ী ব্যবস্থা করতে হবে ও খাবারের মান উন্নয়ন, দাম এসব একটি নিয়মের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে।

১০. লাইব্রেরি সম্প্রসারণ, বইয়ের সংখ্যা বৃদ্ধি ও নতুন বই আনার ব্যবস্থা করতে হবে। একাডেমিক বইয়ের পাশাপাশি চাকরি, সাহিত্য ইত্যাদি বই রাখতে হবে। ইনোভেশন হাব ছাড়া কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি ভবনের সকল ফ্লোর লাইব্রেরির জন্য বরাদ্দ করতে হবে।

১১. চলমান শিক্ষাবর্ষ থেকে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য তার একাডেমিক থিসিস কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে আর্থিক অনুদান প্রদান করতে হবে।

১২. রুয়েটের প্রতিটি একাডেমিক বিল্ডিংয়ে ছেলে ও মেয়েদের আলাদা আলাদা নামাজের জায়গার ব্যবস্থা করতে হবে। ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে সকল ধর্মের আচার অনুষ্ঠানগুলো পালনের সুব্যবস্থা করতে হবে।

রুয়েটের যন্ত্রপ্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী কাউসার সরকার বলেন, সব দাবি না আদায় হওয়া পর্যন্ত রুয়েটের কোনো শিক্ষার্থী একাডেমিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ নেবে না।

সাখাওয়াত হোসেন/জেডএইচ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।