মধ্যরাতে রাবির হলে ছাত্রলীগের তল্লাশি
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: ১০:৩৯ এএম, ১৬ জুলাই ২০২৪
ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ ও পুলিশি হামলার প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখশ হলে স্লোগান দিতে শুরু করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এসময় রড, স্ট্যাম্প ও লাঠিসোটা নিয়ে হলে প্রবেশ করে বিভিন্ন রুমে তল্লাশি চালিয়েছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ফলে পুরো ক্যাম্পাস জুরে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সোমবার (১৫ জুলাই) দিবাগত দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখশ হলের প্রথম ব্লকের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার বিভিন্ন রুমের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাত ১টায় বিভিন্ন হলের রুম থেকে বের হয়ে কোটা সংস্কারের দাবিতে স্লোগান দেওয়া শুরু করেন। মাদার বখশ হলের শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেওয়া শুরু করলে কিছুক্ষণের মধ্যেই শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব হলের ভেতরে প্রবেশ করেন। পরে তার নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা রড, স্ট্যাম্প, লাঠি নিয়ে হলের প্রথম ব্লকের তৃতীয় তলার বিভিন্ন রুমে তল্লাশি চালান।
এ সময় তিনি ও তার নেতাকর্মীরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং তাদেরকে শাসানো হয়। পরবর্তীতে গণমাধ্যমকর্মীদের দেখে তারা হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের স্লোগান এবং হাড়িপাতিল নিয়ে শব্দ করতে নিষেধ করেন। এসময় রাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুও উপস্থিত ছিলেন।
পরবর্তীতে মাদার বখশ হলের প্রভোস্ট মো. রোকোনুজ্জামান ও প্রক্টর আসাবুল হক ঘটনাস্থলে আসেন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদার বখশ হলের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের ব্লকের শিক্ষার্থীরা স্লোগান দিয়েছিল, ফলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা রুমে রুমে তল্লাশি চালায়। কেউ ভয়ে রুমের দরজা খুলতে না চাইলে, দরজা ভাঙার চেষ্টা চালায় তারা। আমরা খুব আতঙ্কে আছি। যৌক্তিক দাবি নিয়ে সরকারের বিপক্ষে শিক্ষার্থীরা কথা বলবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ছাত্রলীগ ও পুলিশ যা শুরু করেছে তা কোনোভাবেই একটি গণতান্ত্রিক দেশে হতে পারে না।’
এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজ রহমান বাবুকে একাধিকবার কল দিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
মাদার বখশ হলের প্রভোস্ট মো. রোকোনুজ্জামান বলেন, তাদের যে কোটা আন্দোলন রয়েছে সেটি ভিন্ন জিনিস। শিক্ষার্থীরা রাত ১টার সময় থালাবাসন বাজিয়ে হলে যে ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করেছে সেটি অবশ্যই অন্যায়। এমনটি জানার পর প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলে আমি দ্রুতই হলে এসেছি।
ছাত্রলীগ হল তল্লাশি করতে পারে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এমন কোনো কিছু আমি শুনিনি বা দেখিনি। আমি হলে এসেই দেখি পরিবেশ অনেকটাই শান্ত। সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে কোনো সিরিয়াস বিষয় আমি এখনো পর্যন্ত দেখিনি।
মনির হোসেন মাহিন/এফএ/জিকেএস