চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

ব্যাট দিয়ে আন্দোলনকারীর মাথা ফাটালেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক চবি
প্রকাশিত: ০৬:১৪ পিএম, ১৫ জুলাই ২০২৪
হামলায় রক্তাক্ত এক শিক্ষার্থী

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) আন্দোলনকারীদের কয়েক দফা মারধর করেছে ছাত্রলীগ। ব্যাট দিয়ে একজনের মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে। মারধরের শিকার হয়েছেন চবি ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক তালাত মাহমুদ রাফি। তাকে প্রক্টর অফিসে নিয়ে যান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত রাফি প্রক্টরের হেফাজতে ছিলেন।

সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুর আড়াইটায় শহরে যেতে গেলে শাটল ট্রেন বন্ধ করে দেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এসময় তারা কোটা আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক তালাত মাহমুদ রাফিকে আটকে রেখে জেরা শুরু করেন। একপর্যায়ে চড়থাপ্পড় দিয়ে মিছিল সহকারে প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসেন। রাফিকে প্রক্টর অফিসে ছাত্রলীগ নিয়ে যাচ্ছে—এমন খবরে কোটা সংস্কার আন্দোলনের কয়েকজন প্রক্টর অফিসের দিকে যেতে থাকলে শহীদ মিনারের সামনে তাদের বেধড়ক মারধর করা হয়। এক আন্দোলনকারীকে ব্যাট দিয়ে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

একইসময় প্রক্টর অফিসে রাফির বিরুদ্ধে কোটা আন্দোলনের নামে বিশৃঙ্খলার অভিযোগ আনেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তারা রাফির মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ভর্তি বাতিলের দাবি জানান।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়/ ব্যাট দিয়ে আন্দোলনকারীর মাথা ফাটালেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা

প্রক্টর অফিসে শাখা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াস বলেন, “কোটা আন্দোলন আমরাও সমর্থন করেছিলাম। আমরা যৌক্তিক সংস্কার চেয়েছি। কিন্তু তারা কালকে নিজেদের ‘রাজাকার’ দাবি করে স্লোগান দিয়েছে। আমরা চবি ক্যাম্পাসে কোনো ‘রাজাকার’ বরদাস্ত করবো না।”

শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিষয়ে চবি ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক পার্থ প্রতিম বড়ুয়া বলেন, ‘আমরা হামলা সমর্থন করি না। কেউ যদি অতি উৎসাহী হয়ে হামলা করে এবং প্রমাণ পাই তাহলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়/ ব্যাট দিয়ে আন্দোলনকারীর মাথা ফাটালেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা

রাফিকে উদ্ধার করতে আসা এক ছাত্রী বলেন, ‘আমরা যৌক্তিক আন্দোলন করতে এসেছি। কিন্তু আমাদের ভাইকে তুলে নিয়ে আসা হয়েছে। তাকে মারধর করা হয়েছে। আমাদের কয়েকজন আন্দোলনকারীকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে প্রক্টর-উপাচার্য আমাদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন।’

মারধরের শিকর তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, ‘গণতান্ত্রিক দেশের একজন নাগরিককে কেউ জোর করে তুলে আনতে পারে না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে।’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়/ ব্যাট দিয়ে আন্দোলনকারীর মাথা ফাটালেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা

এসময় আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে প্রক্টর অধ্যাপক ড. অহিদুল আলম বলেন, ‘আমাদের ইউজিসি থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে শিক্ষার্থীরা আদালতের রায় মেনে যেন ক্লাসে ফিরে যায়। তোমরা যৌক্তিক দাবিতে আদালতে আইনি লড়াই করবে। কিন্তু ভোগান্তি সৃষ্টি করে কোনো আন্দোলন নয়। যদি তোমরা আদালতের রায় মেনে নাও তাহলে আমরা তোমাদের পাশে আছি। অন্যথায় আমরা তোমাদের পাশে নেই।’

ছাত্রলীগের হামলাকারীদের বিষয়ে প্রক্টর বলেন, কারা হামলা করেছে জানি না। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আহমেদ জুনাইদ/এসআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।