প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
খামারিদের ন্যায্যমূল্য দিতে না পারলে দুধের উৎপাদন বাড়বে না
প্রান্তিক খামারিদের দুধের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে না পারলে উৎপাদন বৃদ্ধি সহজ হবে না বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান।
রোববার (২ জুন) রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শেকৃবি) ‘বিশ্ব দুগ্ধ দিবস-২০২৪’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা জানান। শেকৃবির এনিম্যাল সাইন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের ডেইরি বিজ্ঞান বিভাগ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
মন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষের দুধের পুষ্টিচাহিদা পূরণে উৎপাদন বাড়াতে হবে। তবে এক্ষেত্রে প্রান্তিক খামারিদের দুধের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় উৎপাদন বৃদ্ধি সহজতর হবে না।
মূলত দেশের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভেটেরিনারি মেডিসিন এবং হাসবেন্ড্রি বিষয়ক ডিগ্রি কম্বাইন্ডলি দেওয়া হবে নাকি আলাদা ডিগ্রি প্রদান করা হবে- সে বিষয়ক সমস্যা ও দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। দেশের ১৩টি প্রতিষ্ঠান থেকে ভেট সাইন্স এবং হাসবেন্ড্রি বিষয়ক ডিগ্রি দেওয়া হলেও এর মধ্যে ছয়টি প্রতিষ্ঠানে কম্বাইন্ড ডিগ্রি প্রদান করা হয়। দেশের এবং লাইভস্টক সেক্টরের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে দেশের বিভিন্ন ব্যক্তির দীর্ঘদিনের দাবি সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্বাইন্ড ডিগ্রি চালুকরণ।
আরও পড়ুন
এ বিষয়ে প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, দেশের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভেটেরিনারি ও হাসবেন্ড্রি ডিগ্রিজনিত যে সমস্যা আছে এগুলো আমার কাছে বাড়ির ভেতরে বাড়ি কিংবা মশারির ভেতরে মশারি- এই ধরনের সমস্যা বলে মনে হয়। কেননা এগুলো আমদের নিজেদের সমস্যা। তবে এক্ষেত্রে আমাদের সেরা সমাধান বেছে নেওয়া উচিত।
তিনি বলেন, যখন আমরা বিএসসি ভেট সাইন্স এন্ড এএইচ ডিগ্রি করলে একই সঙ্গে ডাক্তারি অর্থাৎ চিকিৎসা সম্পর্কিত জ্ঞান অর্জন করতে সক্ষম হচ্ছি এবং একই সঙ্গে পশুপালনজনিত জ্ঞান অর্জনও করতে পারছি। সেক্ষেত্রে আমাদের শিক্ষার্থী ও জাতির জন্য সর্বোত্তম সমাধান ভেটেরিনারি ও হাসবেন্ড্রি কম্বাইন্ড ডিগ্রি কেন চালু করবো না। নিশ্চয়ই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কম্বাইন্ড ডিগ্রি চালু হওয়া উচিত। এ বিষয়ে আমরা গভীরভাবে চিন্তা করবো।
এদিন সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বর্ণাঢ্য র্যালির মাধ্যমে শুরু হয় ‘বিশ্ব দুগ্ধ দিবস-২০২৪’। পরে শেখ রাসেল মিলনায়তনে প্রাণিসম্পদমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সভা ও সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
শেকৃবির এএসভিএম অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. কে বি এম সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ্র, ময়মনসিংহ-৫ আসনের সংসদ সদস্য কৃষিবিদ নজরুল ইসলাম, শেকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. অলোক কুমার পাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম।
আরও পড়ুন
অনুষ্ঠানের প্রতিপাদ্যের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শেকৃবির ডেইরি বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান। তিনি দুধের উপকারিতার কথা উল্লেখ করে বলেন, দুধের মধ্যে বিদ্যমান ল্যাকটোজ আমাদের জন্য উপকারী। দুধের ফ্যাটের কোনো ক্ষতিকর দিক নেই। যদিও অন্যান্য ফ্যাটের অপকারিতা রয়েছে। তাই প্রচলিত ভুলজ্ঞান বাদ দিয়ে আমাদের দুধ উৎপাদন ও গ্রহণের দিকে গুরুত্ব দিতে হবে।
এদিন ‘বিশ্ব দুগ্ধ দিবস-২০২৪’ কেন্দ্র করে ফ্রি’তে দৈনিক ১০০ এতিম শিশুকে ২৫০ মিলি করে দুধ খাওয়ানোর কার্যক্রম গ্রহণ করা হয় এবং এই কার্যক্রম বছরব্যাপী চলবে বলে উল্লেখ করা হয়। কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দের অর্থায়নে শেকৃবির এএসভিএম অনুষদ এ উদ্যোগ গ্রহণ করে।
তাসনিম আহমেদ তানিম/ইএ/জিকেএস