পুরোদমে চলছে মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতি

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: ০৪:০৬ পিএম, ২৫ মার্চ ২০২৪

‘আমরা তো তিমিরবিনাশী’ প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উদযাপিত হবে বাংলা নববর্ষ-১৪৩১। নববর্ষের অন্যতম আকর্ষণ মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এরইমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা। টুংটাং শব্দ ও রংতুলির আঁচড়ে পুরোদমে এগিয়ে চলছে মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতি পর্বের কর্মযজ্ঞ।

সোমবার (২৫ মার্চ) দুপুরে চারুকলা অনুষদ প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, বাঁশ-কাঠে হাতুরির টুংটাং শব্দ ও করাতের শব্দে মুখর চারুকলার একপাশ। মিস্ত্রিরা একমনে কাজ করে যাচ্ছেন। কেউ বাঁশ কেটে ফালি করছেন, আবার কেউ করাত দিয়ে শোভাযাত্রার বিভিন্ন উপকরণ প্রস্তুতের জন্যে কাঠ কেটে প্রস্তুত করছেন। মিস্ত্রিদের কেউ কেউ বাশের ফালি দিয়ে শোভাযাত্রার বিভিন্ন উপকরণের অবয়ব তৈরি করছেন।

পুরোদমে চলছে মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতি

পাশেই একটি কক্ষে কাগজ, কাপড়সহ নানা উপকরণে বিভিন্ন আকৃতির মুখোশের অবয়ব তৈরি করছেন শিক্ষার্থীরা। আবার কেউ কেউ অবয়ব দেওয়া মুখোশের আকৃতিগুলোতে রং তুলি দিয়ে ফুটিয়ে তুলছেন সজীবতা। কেউ কেউ বানাচ্ছেন কাগজের নৌকা। কাগজ দিয়ে বিভিন্ন আকৃতির পাখ-পাখালি, ঘোড়া, হাতি বানাচ্ছেন কেউ কেউ। পুরো কক্ষ জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে রং-তুলি ও কাগজের টুকরো।

কর্মরত শিক্ষার্থীরা বলেন, পহেলা বৈশাখ আমাদের প্রাণের উৎসব। এই উৎসবের জন্যে আমরা চারুকলার শিক্ষার্থীরা সারাবছর অপেক্ষায় থাকি। শোভাযাত্রার জন্যে যে মুখোশ এবং ছোট ছোট ভাস্কর্য তৈরি করা হয় এগুলোতে আমরা শিক্ষার্থীরা অনেক আগ্রহ নিয়ে কাজ করি। নিজের মনের ছবিগুলো আমরা এই শিল্পকর্মগুলোতে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করি।

এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার সার্বিক কার্যক্রমের দায়িত্বে আছে অনুষদের ২৫ তম ব্যাচ। কথা হয় এই ব্যাচের ভাস্কর্য বিভাগের শিক্ষার্থী দেবব্রত বিশ্বাসের সঙ্গে। প্রস্তুতির ব্যপারে তিনি জানান, অন্যবার তো শুরুর দিকে রমজান থাকে না। এবারে রমজানের কারণে লোকজন খুবই কম। আমাদের প্রস্তুতিটা তো নির্ভর করে অনেকটা ফান্ড কালেকশনের ওপরে। আমরা প্রতিবছর কিছু পেইন্টিং বা এমন আইটেম বিক্রি করে এর খরচ জোগাই। যেটি আমরা বিক্রি শুরু করলেও এখনো সেইভাবে বিক্রি শুরু করতে পারি নি। কারণ লোকজনের আনাগোনা খুবই কম। ফলে প্রস্তুতি খুব বেশি এগোয়নি।

পুরোদমে চলছে মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতি

তিনি বলেন, সবকিছু আমরা গুছিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি। আমাদের পাঁচটা স্ট্রাকচার হবে। এরইমধ্যে আমরা তিনটার কাজ শুরু করে দিয়েছি। তারমধ্যে একটার ২০ শতাংশের মত কাজ হয়েছে। বাকি দুইটি এখনো শুরুর পর্যায়েই আছে। যেহেতু এবার পহেলা বৈশাখ ঈদের দুই তিন দিন পরেই হবে। তাই খুব স্বাভাবিকভাবেই ঈদের ছুটিতে সবাই বাড়িতে থাকার ফলে লোক সমাগম অনেক কম হবে।

মঙ্গল শোভাযাত্রা উপ-কমিটির আহ্বায়ক চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন বলেন, এবার যেহেতু ঈদের সময়টাতে পহেলা বৈশাখ পড়েছে। তাই ঈদের আগেই সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রস্তুতির কাজটা ছাত্ররাই করে, ঈদের কারণে তাদের তেমন পাওয়া যাবে না। এজন্য এবার সংক্ষিপ্ত পরিসরেই করার চিন্তাভাবনা আছে।

হাসান আলী/এসআইটি/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।