যবিপ্রবি

ছাত্রলীগ নেতাকে সালাম না দেওয়ায় শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি যশোর
প্রকাশিত: ০৩:২২ এএম, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতির সামনে লুঙ্গি পরে চলাফেরা ও সালাম না দেওয়ায় এক শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় যশোর কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি ও হলের প্রভোস্ট বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী।

শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টার দিকে যবিপ্রবির শহীদ মসীয়ূর রহমান হলের ৩০৮ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী মো. মাঞ্জুরুল হাসান বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স (এফএমবি) বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। এ ঘটনার পর তিনি যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন।

অভিযুক্তরা হলেন, যবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানা, ছাত্রলীগ কর্মী ও ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ফয়সাল আহমেদ, শারীরিক শিক্ষা বিভাগের ইসাদ হোসেন, আল আমিন, শেখ বিপুল হাসান ও মুশফিক, ফার্মেসি বিভাগের রাইসুল হক রানা এবং অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে আরও কয়েকজনকে। এদের মধ্যে ফয়সাল আহমেদ ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলার দায়ে আগে থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিষ্কৃত। এরপরও তিনি ক্যাম্পাস ছাত্রলীগের ছত্রছায়ায় ছাত্রাবাসে অবস্থান করে আসছিলেন।

আহত মাঞ্জুরুল হাসান লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, ‘শুক্রবার রাতে আমি শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের ৩০১ নম্বর কক্ষ থেকে বের হলে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানার সঙ্গে দেখা হয়। সেসময় তাকে সালাম না দেওয়া এবং লুঙ্গি পরে তার সামনে চলাচলের অভিযোগে পরে আমাকে আমার কক্ষ থেকে ডেকে ৩০৮ নম্বর কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর সভাপতির নির্দেশে আমাকে এলোপাতাড়ি মারধর করা হয়। এক পর্যায়ে আমার চিৎকারে হলের অন্য শিক্ষার্থীরা এগিয়ে আসলে তারা হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যান।’

jagonews24.com

যশোর জেনারেল হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে শনিবার বিকেলে ছাত্রাবাসে ফিরেছেন মাঞ্জুরুল হাসান। এ বিষয়ে মুঠোফোনে মাঞ্জুরুল বলেন, ‘আমার দুই চোখেই সমস্যা। তেমন একটা দেখতে পাই না। রাতে আমি যখন লুঙ্গি পরে বাইরে যাচ্ছিলাম, তখন ছাত্রলীগের সভাপতিসহ তার কর্মীরা আমার সামনেই পড়ে যান। এরপর তারা ফিরে এসে আমাকে ডেকে নিয়ে বেধড়ক মারধর করেন। এক পর্যায়ে ছাত্রলীগের সভাপতি আসেন। তখন তার কাছে ক্ষমা চাই। এসময় ওদের মধ্যে একজন আমাকে বলেন- ভাইকে সালাম দিছিস না কেন? কেন লুঙ্গি উঁচু করে পরেছিস? তারপর তারা আমাকে আবারও মারধর করেন।’

তবে ছাত্রাবাসে কোনো শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়নি দাবি করে যবিপ্রবি ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানা বলেন, ‘রাতে শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক এবং ফিশারিজ ও মেরিন বায়োসায়েন্স বিভাগের কিছু ছেলে আমার কক্ষের সামনে জুনিয়রদের সঙ্গে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে তাদের বুঝিয়ে যার যার কক্ষে যেতে বলি। কাউকে মারধর করা হয়নি। এছাড়া যারা বিশৃঙ্খলা করছিল তারা ছাত্রলীগের কোনো পদে নেই। মাঝেমধ্যে তারা প্রোগামে আসে। ক্যাম্পাস রাজনীতির গ্রুপিংয়ের বলি হিসেবে আমাকে দোষারোপ করা হচ্ছে।’

এ বিষয়ে শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের প্রভোস্ট ড. মো. তানভীর ইসলাম বলেন, ‘শুক্রবার রাতে মারামারির ঘটনা শুনে সহকারী প্রভোস্টদের নিয়ে ছাত্রাবাসে আসি। এসে দেখি ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মাথায় পানি ঢালা হচ্ছে। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ বিষয়ে শনিবার একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে অভিযুক্ত ও ছাত্রাবাসে অবস্থান করা বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীর বিষয়েও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মিলন রহমান/কেএসআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।