১৩ বছর ধরে ক্যাম্পাসে রিকশা চালান সেলিম, সংসার চালাতে হিমশিম

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক শাবিপ্রবি
প্রকাশিত: ০৩:৩৮ পিএম, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

মা, স্ত্রী ও চার সন্তান নিয়ে সেলিম মিয়ার পরিবার। প্রথমে ফুটপাতে বেচাকেনা করলেও সময়ের ব্যবধানে পেশা বদলান। ২০১২ সালের দিকে ছুটে আসেন সিলেট শহরে। শুরু করেন কলার ব্যবসা। পেশা বদলালেও সচল হয়নি ভাগ্যের চাকা।

ব্যবসার লোকসানে যখন হতাশায় দিন পার করছিলেন সেলিম মিয়া, ঠিক তখনই নতুন স্বপ্ন নিয়ে শুরু করেন রিকশার প্যাডেলে পা রাখা। প্রায় ১৩ বছর ধরে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রিকশা চালিয়ে সংসারের যাবতীয় ব্যয় নির্বাহ করছেন তিনি।

সেলিম মিয়া বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ধামালীপাড়ায় মেস ভাড়া নিয়ে একা থাকেন। তার বাড়ি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের মইনপুরে। টিনের তৈরি ছোট্ট একটি ঘরে থাকেন সেলিম মিয়ার পরিবারের সদস্যরা। মাস শেষে যে টাকা উপার্জন হয় তা দিয়ে চলে সংসার।

সেলিম মিয়া বলেন, দরিদ্রতার কারণে অনেক বিপদ-আপদের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। কষ্ট যেন পিছু ছাড়ছে না। নিত্যদিনের প্রয়োজন মেটানোর পাশাপাশি মায়ের অসুস্থতা ও প্রতিবন্ধী মেয়ের চিকিৎসার খরচ চালানো যেন মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে রিকশা চালাচ্ছি। শুরু থেকেই শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে রিকশা চালাই। প্রতি সপ্তাহে বাসায় যাই। পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে দিয়ে আসি। তবে রিকশা চালিয়ে যে টাকা পাই তা দিয়ে পরিবার চালানো সম্ভব হচ্ছে না। ঋণ করতে হয়। কোনো দিন ভালো টাকা উপার্জন হয় আবার কোনোদিন তেমন হয় না।

নিজের মেস ভাড়া, খাবার খরচসহ প্রয়োজনীয় খরচ চালাতে মাসে প্রায় ১০ হাজার টাকার মতো লাগে সেলিম মিয়ার। তিনি বলেন, ‘মেয়ের মাসিক খরচ প্রায় তিন হাজার টাকা। মায়ের ওষুধ কিনতেও লাগে হাজারের ওপরে। পাশাপাশি বাকি তিন সন্তানের পড়াশোনা ও ভরণপোষণে অনেক টাকা লাগে। বলতে গেলে কোনোরকমে সংসারের হাল ধরে আছি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘ঝড়-বৃষ্টি-রোদ সবসময় ক্যাম্পাসে যাতায়াতে টমটমের পাশাপাশি রিকশাওয়ালা মামাদের পেয়ে থাকি। তারা অনেক কষ্ট করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সবাইকে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে দেন। তাদের সঙ্গে ভালো আচরণ করা এবং বিভিন্ন সময় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া প্রয়োজন।’

নাঈম আহমদ শুভ/এসআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।