শেকৃবির ভেট সার্জনের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

তাসনিম আহমেদ তানিম
তাসনিম আহমেদ তানিম তাসনিম আহমেদ তানিম , শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি) প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:৫০ পিএম, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
ছবি- ভেট সার্জন রূপ কুমার

রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) ভেটেরিনারি ক্লিনিক অ্যান্ড টিচিং হাসপাতাল চালু হতে না হতেই শুরু হয়েছে অনিয়ম। অতিরিক্ত অর্থ আদায়, প্রেসক্রিপশনে হাসপাতালের নিজস্ব প্যাড ব্যবহার না করে বেসরকারি একটি ক্লিনিকের প্যাড ব্যবহার করাসহ নানারকম অভিযোগ পাওয়া গেছে হাসপাতালে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত ভেট সার্জন রূপ কুমারের বিরুদ্ধে।

হাসপাতালে ভেট সার্জন হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ডা. রূপ কুমার। নিয়োগ পেয়েই বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। নির্ধারিত ফির অতিরিক্ত অর্থ আদায়, প্রেসক্রিপশনে হাসপাতালের নিজস্ব প্যাড ব্যবহার না করে বেসরকারি একটি ক্লিনিকের প্যাড ব্যবহার করাসহ নানারকম অভিযোগ পাওয়া গেছে ভেট সার্জন ডা রূপ কুমারের বিরুদ্ধে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি ক্লিনিক ও টিচিং হাসপাতালটি চালু হয় গত বছরের মে মাসে। সেখানে গত ১৯ ডিসেম্বর স্থায়ীভাবে একজন ভেট চিকিৎসক হিসেবে ডা. রূপ কুমারকে নিয়োগ দেওয়া হয়। নিয়োগের পর থেকেই বিভিন্ন পোষা প্রাণী ও গবাদি পশুর চিকিৎসা করে আসছেন নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসক ডা. রূপ কুমার। কিন্তু প্রেসক্রিপশনে করছেন ‘ভেট অ্যান্ড পেট কেয়ার’ নামে বেসরকারি একটি ক্লিনিকের প্যাড। তাতে চিকিৎসক রূপ কুমারের নাম, ফোন নম্বর ও ক্লিনিকের ঠিকানা ঢাকার লালমাটিয়া উল্লেখ করা।

হাসপাতালটিতে কর্মরত একাধিক ইন্টার্ন ভেট চিকিৎসক এবং সেবাগ্রহীতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিনি দীর্ঘদিন যাবত বেসরকারি ক্লিনিকটির সঙ্গে জড়িত। এদিকে হাসপাতাল থেকে নির্ধারিত ফি থেকে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

আরও পড়ুন: ২৯ খাতে অনিয়ম, লোপাট আড়াইশো কোটি টাকা! 

রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি ক্লিনিকে সরেজমিনে দেখা যায়, গবাদিপশু (ছাগল) চিকিৎসা নিতে আসা ব্যক্তির থেকে ভিজিট বাবদ নেওয়া হয় ৩০০ টাকা এবং মাইনর সার্জারি খরচ বাবদ নেওয়া হচ্ছে ২০০ টাকা। অথচ অফিস আদেশ অনুযায়ী গবাদিপশু চিকিৎসায় রেজিস্ট্রেশন (ভিজিট) বাবদ ব্যয় ৫০ টাকা এবং মাইনর সার্জারি বাবদ ব্যয় ১০০ টাকা হওয়ার কথা।

অতিরিক্ত অর্থ নেওয়ার ফলে সেবা নেওয়া ব্যক্তিদের প্রশ্ন উঠেছে নাগরিক সেবা নাকি অতিরিক্ত মুনাফা লাভই ক্লিনিকের মূল উদ্দেশ্য।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, সরকারি হাসপাতালে সেবা দেওয়ার একটা নির্ধারিত মূল্য তালিকা থাকে। এর বাইরে ফি আদায় নিঃসন্দেহে একটি অন্যায় কাজ। শুনেছি আমাদের ভেটেরিনারি টিচিং হাসপাতালে ৩০০ টাকা ভিজিটসহ অন্যান্য সার্ভিসিং চার্জ রাখা হচ্ছে যা কর্তৃপক্ষের ধার্যকৃত মূল্য তালিকার চেয়ে বেশি।

তিনি বলেন, এছাড়াও সরকারি হাসপাতালে প্রাইভেট ক্লিনিকের ব্যবস্থাপত্রে প্রেসক্রিপশন করা বেআইনি। হাসপাতালের নাম ঠিকানা সংবলিত নিজস্ব ব্যবস্থাপত্র থাকা উচিত। যদি না থাকে সেক্ষেত্রে সাদা কাগজে প্রেসক্রিপশন করে অফিসারের নাম পদবী সংবলিত সিল থাকা উচিত।

অভিযোগের বিষয়ে ডা. রূপ কুমার বলেন, এখন পর্যন্ত ভিজিট নির্ধারণ করে দেওয়া হয়নি। ডিন স্যারের নির্দেশক্রমে ৩০০ টাকা ভিজিট এবং ওষুধ ও সার্জারির জন্য খরচ অনুযায়ী টাকা নিচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্যাড না দেওয়ায় ব্যক্তিগত ক্লিনিকের প্যাড ব্যবহার করছি। ক্লিনিকটি ডিন কে বি এম সাইফুল স্যারের।

এ বিষয়ে এএসভিএম অনুষদের ডিন ড. কে বি এম সাইফুল ইসলাম বলেন, আমার ক্লিনিকের প্যাড ব্যবহারের কথা বলি নাই। ২০২০ সালে একটি মূল্য তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছিল সে অনুযায়ী টাকা নেওয়া হচ্ছে।

তাসনিম আহমেদ তানিম/এমআরএম/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।