রাতের শাটলে ১৫ শিক্ষার্থী আহত
বাসায় থাকলে আমাকেও মেরে ফেলতো: চবি উপাচার্য
রাতের শাটল ট্রেনে শিক্ষার্থীদের আহত হওয়ার ঘটনায় বিক্ষুব্ধরা বিশ্ববিদ্যালয়ে রীতিমতো ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার। তিনি বলেছেন, আমি বাসায় থাকলে আমাকেও মেরে ফেলতো। যারাই রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতিসাধন করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপাচার্যের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: চবি উপাচার্যের বাসভবন ও পুলিশ ফাঁড়িতে শিক্ষার্থীদের ভাঙচুর
চবি ভিসি বলেন, আমাদের প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এরপরও বিশ্ববিদ্যালয় স্বাভাবিকভাবে চলবে। আমরা সেভাবেই কাজ করছি। ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মামলা করেছে। এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে। তদন্ত কমিটির মাধ্যমে সিদ্ধান্ত আসবে।
তিনি আরও বলেন, আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার বিষয়ে দায়িত্ব নেবে প্রশাসন। তাদের খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। তাদের যাবতীয় উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা প্রশাসন করবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাত সাড়ে ৮টায় নগরীর বটতলী স্টেশন থেকে ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে রওনা হয় চবির শাটল ট্রেন। চৌধুরীহাট এলাকায় পৌঁছালে অন্ধকারে নুয়ে পড়া গাছের ডালের সঙ্গে ধাক্কা লেগে শাটলের ছাদে থাকা অন্তত ১৫ শিক্ষার্থী আহত হন। পরে তাদের উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় ফতেয়াবাদ ক্লিনিকে এবং পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: চবি উপাচার্যের বাসভবন যেন ধ্বংসস্তূপ
দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে রাতেই ক্যাম্পাসের মূল ফটক অবরুদ্ধ করে অবস্থান নেন চবির সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা রাতে উপাচার্যের বাসভবনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। ভাঙচুর চালানো হয় স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতেও।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের দাবি, শাটলে পর্যাপ্ত আসন না থাকায় প্রতিদিনই ছাদে চড়ে ক্যাম্পাসে যাতায়াত করতে বাধ্য হন তারা। এতে হারহামেশাই দুর্ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্বহীনতার কারণে বারবার এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে বলেও অভিযোগ তাদের।
দুর্ঘটনার খবরে ওই রাতে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা প্রথমে জিরো পয়েন্টে থাকা পুলিশ বক্সে হামলা চালান। এসময় পুলিশ বক্স পুরোটা ভেঙে ফেলা হয় এবং ভেতরে থাকা চেয়ার-টেবিল জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। এরপর তারা উপাচার্যের বাসভবনে হামলা চালান। সেখান থেকে পরিবহন দপ্তরের দিকে গিয়েও তাণ্ডব চালান। পরে তারা শিক্ষক ক্লাবে হামলা চালান।
আহতদের মধ্যে বর্তমানে ৯ জন চিকিৎসাধীন। তাদের মধ্যে আইসিইউতে তিনজন এবং নিউরো সার্জারি ওয়ার্ডে আছেন ছয়জন।
আরও পড়ুন: চবিতে রাতের শাটলে ছাদে চড়ে ক্যাম্পাসে ফেরার পথে ১৫ শিক্ষার্থী আহত
এদিকে পরিবহন দপ্তর দাবি করেছে, তাদের অর্ধশতাধিক বাস-মিনিবাস ভাঙচুর করা হয়েছে। এরমধ্যে পরিবহন দপ্তরে থাকা দুটি এসি বাসসহ ৩০টি বড় বাস, ১৮টি প্রাইভেটকার, ২টি পিকআপ, ১টি মোটরসাইকেল ও ১টি পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে।
আহমেদ জুনাইদ/এমকেআর