সংস্কারের অভাবে ঝুঁকিতে শাবিপ্রবির কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক শাবিপ্রবি
প্রকাশিত: ০৪:৪৩ পিএম, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মূলবেদী, সমতল জায়গার মাটি সরে যাওয়া, সাপোর্ট দেওয়াল ও সিঁড়িসহ বিভিন্ন জায়গায় ফাটল ও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় শহীদ মিনারের সৌন্দর্য নষ্টের পাশাপাশি শিক্ষার্থী-দর্শনার্থীরা ঝুঁকির মধ্যে পড়ছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে একটি টিলায় নির্মিত ১০১টি সিঁড়িবিশিষ্ট এ শহীদ মিনারে মূলবেদী, বেদীতে ওঠার আগে সমতল জায়গা, সাপোর্ট দেওয়াল, সিঁড়িসহ বিভিন্ন জায়গায় ফাটল ও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বেদীর বামপাশের মাটি সরে গেছে। কোথাও কোথাও ইট সরে গিয়ে তৈরি হয়েছে গর্ত। সাপোর্ট দেওয়ালের পাশে বড় ফাটল।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা হওয়ায় ২০১৬ সালের আগ থেকে শহীদ মিনারের বিভিন্ন জায়গায় ফাটলের সৃষ্টি হয়। যা বর্তমানে বেড়ে বড় গর্ত ও ফাটল সৃষ্টি হয়েছে।

আরও পড়ুন: নৈসর্গিক সৌন্দর্যে সবচেয়ে উঁচুতে শহীদ মিনার 

বিভিন্ন সময়ে শহীদ মিনারের এসব ফাটল সংস্কারে দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা । তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। এমনকি শহীদ মিনার সংস্কারের বিষয়টি একাধিকবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে ওঠে এসেছে। এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয় নি।

jagonews24

এখানে ঘুরতে আসা কয়েকজন দর্শনার্থী জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের কথা অনেক শুনেছি। বন্ধুদের সঙ্গে এসেছি দেখতে। তবে এসে যে অবস্থা দেখলাম তাতে খারাপ লাগলো। সম্পূর্ণ শহীদ মিনার স্যাঁতস্যাঁতে ও পিচ্ছিল হয়ে রয়েছে। তাছাড়া বিভিন্ন জায়গাতে ফাটল দেখা দিয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফাহিম শাকিল বলেন, শহীদ মিনারের ফাটল দিনদিন বাড়ছে। ফলে শহীদ মিনারের সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি দর্শনার্থীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। তাছাড়া শহীদদের সম্মানে নির্মিত এ জায়গা সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা দরকার।

আরও পড়ুন: অপরূপ সৌন্দর্যের শাবিপ্রবি 

বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জহির বিন আলম জাগো নিউজকে বলেন, টিলার ওপরে হওয়ায় বৃষ্টির কারণে শহীদ মিনারের নিচের মাটি সরে যাচ্ছে। যেসব জায়গায় ফাটল ধরেছে সেসব জায়গায় ‘রিটেইনিং ওয়াল’ তৈরি করতে হবে।

বিষয়টি জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে একাধিকবার কল দিলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

তবে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. কবির হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, একটা ভালো বিষয় বলছো। এ বিষয়ে আমরা অবগত রয়েছি। শিগগির ভিসি স্যারসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করে দ্রুত সংস্কারের কাজ শুরু করবো।

১৯৯২ সালে বর্তমান শহীদ মিনারের নিচে ছোট-বড় তিনটি স্তম্ভ তৈরির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম শহীদ মিনার স্থাপিত হয়। পরে ২০০১ সালের দিকে প্রায় ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে স্থপতি মহিউদ্দিন খানের নকশায় বর্তমান শহীদ মিনারটি নির্মিত হয়। যা তৎকালীন জাতীয় সংসদের স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

নাঈম আহমদ শুভ/আরএইচ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।