চিরকুট লিখে রাবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা
চিরকুটে ‘স্বেচ্ছায় মৃত্যু’ লিখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। বৃহস্পতিবার (৮ জুন) দিবাগত রাত ১২টার পর বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিনোদপুর ক্ষনিকা ছাত্রাবাসের বিপরীতে স্টুডেন্ট প্যালেস মেসে এ ঘটনা ঘটে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আসাবুল হক বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন।
নিহত মো. তানভীর ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি নীলফামারী সদর থানার কাঞ্চন পাড়ার আবু বকর সিদ্দিকের ছেলে।
তানভীরের রুম থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে। তাতে লেখা রয়েছে, প্রিয় বাবা-মা, আপনাদের অনেক ভালোবাসি। জানি না কোথায় কমতি ছিল। আম্মুর জন্য বেশি খারাপ লাগছে। আমাদের ফ্যামিলিতে আম্মুর অবদানই বেশি বলে আমি মনে করি। কথাটা বলার অনেক কারণ আছে, সেটা আব্বু জানে। তোমাদের জন্য কিছু করতে তো পারলামই না উল্টো ফ্যামিলিকে শেষ করলাম। ছোট বোনটার কথা আর বললাম না। কান্না পাচ্ছে...।
দিনের পর দিন আপনাদের ঠকিয়ে গেছি। এসব আপনারা জানতে পারলে হয়তো ভেতর থেকেই মরে যেতেন। সবসময় ভয়ে ভয়ে থাকতাম, গলা দিয়ে খাবার নামতো না। শেষ করলাম সবকিছু। এসব কিছু থেকে বাঁচার জন্য এ সিদ্ধান্ত, আর কোনো উপায় ছিল না আমার কাছে। শেষমেষ একাকীত্ব আমাকে গিলে খেলো। মনের শক্তি ফুড়িয়ে এলে দেহের শক্তি যতই থাকে সম্ভব না বাঁচা। যদিও ক্ষমার যোগ্য না আমি, পারলে ক্ষমা করে দিয়েন। আপনাদের অযোগ্য সন্তান।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আসাবুল হক বলেন, আমরা দড়ি দিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় তাকে পেয়েছি। পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আত্মহত্যা করার আগে নিহত শিক্ষার্থী একটি সুইসাইড নোট লিখে যান। যেখানে আসলে কাউকে দোষারোপ না করে স্বেচ্ছায় আত্মহত্যা করেছেন বলে লেখা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পুলিশ এখন পোস্টমর্টেম করবে। পরে আমরা মরদেহ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করবো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মতিহার থানার পরিদর্শক মো. রুহুল আমিন বলেন, আমি বিষয়টি অবগত আছি এবং মেডিকেলেও গিয়েছিলাম। এখনো আমরা মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে পারিনি। সঠিক কারণ জেনে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
মনির হোসেন মাহিন/ইএ