মসজিদের সৌন্দর্যে মুগ্ধ মুসল্লিরা
মসজিদে প্রবেশ করতেই চোখ জুড়িয়ে যায় মুসল্লিদের। দূর-দূরান্ত থেকে নামাজ পড়তে আসেন হাজারো মুসল্লি। মসজিদের সৌন্দর্য বাড়াতে চারদিকে স্থাপন করা হয়েছে লাইটপোস্ট। নির্মাণ করা হয়েছে বিভিন্ন স্থাপনাও। সুবিশাল অভ্যন্তরীণ এ মসজিদে নেই কোনো পিলার। মূল কাঠামোর মধ্যবর্তী স্থানে ওপরের দিকে নির্মাণ করা হয়েছে বিশালাকার গম্বুজ। শ্বেত-শুভ্র ঝাড়বাতিগুলো এতই মনোরম যে নির্মাণের প্রতিটি স্তরের সঙ্গেই তা একবারে মিশে গেছে।
বলা হচ্ছে অসাধারণ নির্মাণশৈলী ও নান্দনিকতার ছোঁয়ায় নির্মিত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের কথা।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক পেরোতেই চোখে পড়ে প্রশাসনিক ভবন। এ ভবনের ডান দিকে একশ হাত সামনে গেলেই চোখে পড়ে মুসলিম স্থাপত্যের আদলে নির্মিত সুউচ্চ মিনার। এর পাশেই অবস্থিত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ। এ কারুকার্যে নির্মিত দৃষ্টিনন্দন মসজিদটি ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বাড়িয়ে সূচনা করেছে এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়ের।
সরেজমিনে দেখা যায়, মসজিদের সৌন্দর্য প্রকাশ ও পবিত্রতা রক্ষার্থে চারপাশ ঘিরে রয়েছে দেওয়াল। মসজিদের আঙিনাজুড়ে সারিবদ্ধ ঝাউগাছ। এ গাছগুলোর মধ্যে দিয়ে প্রবেশ করেন আগত মুসল্লিরা। দক্ষিণ পাশে ফোয়ারা, ওজুখানা, অফিসরুম ও শৌচাগার। দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে রয়েছে পেশ ইমামের বাংলো। এছাড়া রয়েছে হরেক রকমের ফলের গাছ ও ঈদগাহ। শ্বেত-শুভ্র ঝাড়বাতিগুলো এতই মনোরম যে নির্মাণের প্রতিটি স্তরের সঙ্গেই তা একবারে মিশে গেছে। মসজিদের পাশেই রয়েছে একটি উন্মুক্ত লাইব্রেরি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলী দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭০ সালের ১৩ এপ্রিল প্রায় তিন একর জায়গা নিয়ে এ মসজিদের নির্মাণকাজ শুরু হয়। মূল কাঠামোর দৈর্ঘ্য ৫২ ও প্রস্থ ৫২ গজ। ঢাকার বায়তুল মোকাররম মসজিদের নকশা প্রণেতা ‘থারিয়ানির’ নকশার আলোকে এ মসজিদের নির্মাণকাজ শেষ হয় ১৯৭৪ সালের মার্চে।
পরে তৎকালীন উপাচার্য প্রফেসর সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
রাবি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদটির তৎকালীন নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল তিন লাখ ৭৪ হাজার টাকা। কিন্তু পরে সেই কাজ শেষ করতে ব্যয় হয় প্রায় আট লাখ টাকা। মসজিদের ভেতর ও বাইরের ফাঁকা জায়গাসহ প্রায় আড়াই হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন।
মসজিদে বর্তমানে পেশ ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মাওলানা ফাহিম মাহমুদ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে পড়ার পাশাপাশি মাওলানা সম্পূর্ণ করেন। মসজিদ পরিচালনার জন্য একটি উপদেষ্টা কমিটি রয়েছে। প্রতি দুই বছর পরপর কমিটি গঠন করা হয়। মসজিদের একজন সিনিয়র পেশ ইমাম ও একজন মুয়াজ্জিন আছেন। এছাড়া দৃষ্টিনন্দন এ মসজিদের তত্ত্বাবধায়নে দুজন সহকারী রেজিস্ট্রার ও একজন সেকশন অফিসার রয়েছেন।
এ বিষয়ে লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী মানিক মিয়া বলেন, রাবির কেন্দ্রীয় মসজিদ আসলেই অসাধারণ। এত সুন্দর ডিজাইনে নির্মিত মসজিদ বর্তমানে চোখে খুব কম পড়ে। আমি প্রায়ই এখানে নামাজ পড়তে আসি।
কথা হয় মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা ফাহিম মাহমুদের সঙ্গে। তিনি জাগো নিউজকে জানান, রাবির ছাত্রদের ১১ আবাসিক হল, কাজলাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের এলাকা থেকে মুসল্লিরা শুক্রবার জুমার নামাজ পড়তে এ মসজিদে আসেন। এ মসজিদে দুই ঈদেও মুসল্লিদের ভিড় হয়।
মনির হোসেন মাহিন/এএইচ/জেআইএম