রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

শিক্ষার্থী-ব্যবসায়ী সংঘর্ষে রামেকে ভর্তি ৮৪

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি রাজশাহী
প্রকাশিত: ০৮:২১ এএম, ১২ মার্চ ২০২৩

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের পর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮৪ জন। তাদের অধিকাংশই রাবি শিক্ষার্থী। আহতদের মধ্যে পুলিশ ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও আছেন।

তবে পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হয়েছেন রাবির কয়েকজন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে তিনজনের চোখে ও তিনজনের পুরো শরীরে গুলির ক্ষত চিহ্ন আছে।

শনিবার (১১ মার্চ) রাতে রামেক হাসপাতাল পুলিশ বক্সের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) মুকুল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আহতদের মধ্যে রাবি শিক্ষার্থী মো রাকিব আইসিইউতে চিকিৎসাধীন।

আরও পড়ুন: ‘পুলিশের গুলিতে’ আহত রাবির ১৫ শিক্ষার্থী, একজন আইসিইউতে

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত চিকিৎসক ডা. জাহিদুল ইসলাম বলেন, রাবিতে সংঘর্ষের ঘটনায় মোট ৮৪ জন ভর্তি আছেন। তাদের অধিকাংশ রাবি শিক্ষার্থী। এর পাশাপাশি পুলিশ ও অন্য সাধারণ জনগণও আছে। তাদের বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসা চলছে।

তিনি বলেন, রাবির সাত শিক্ষার্থীর অবস্থা কিছুটা গুরুতর। তাদের শরীরে বুলেটের চিহ্ন আছে। বিশেষ করে তিন শিক্ষার্থীর চোখে বুলেট লেগেছে। এক শিক্ষার্থীর মাথায় বুলেট লেগেছে তাকে আইসিইউতে ভর্তি রাখা হয়েছে। অন্যদের স্বাভাবিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে সকালে চিকিৎসক এসে কারও উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন কী না সেটি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা তারেক নূর বলেন, আমরা চাচ্ছি আমাদের ছাত্রদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে। আমাদের সব ছাত্ররা যেন চিকিৎসা পায় সেটি দেখভাল করছি। ছাত্রদের সবার অবস্থা মোটামুটি ভালো আছে।

jagonews24

এর আগে শনিবার সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষ শুরু হলে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিনোদপুর বাজার রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা অন্তত ২৫-৩০টি দোকানে অগ্নিসংযোগ করেন। এ ঘটনায় শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীরা আহত হয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বগুড়া থেকে ‘মোহাম্মদ’ নামের একটি বাসে রাজশাহী যাচ্ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থী। বাসের সিটে বসাকে কেন্দ্র করে চালক শরিফুল ও তার সহযোগী রিপনের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় ওই শিক্ষার্থীর। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বিনোদপুর বাজারে বাস থেকে নামার সময় তাদের আবারও কথা কাটাকাটি হয়। এসময় বিনোদপুর বাজারের একজন ব্যবসায়ী বাসচালকের পক্ষ নিয়ে কথা বলেন। তখন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে হাতাহাতি হয় তার।

আরও পড়ুন: রাবির পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সাত প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন

খবর পেয়ে সেখানে যান বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া। এসময় ব্যবসায়ীরা তার মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন। ধাওয়া দিয়ে তাকে ক্যাম্পাসের ভেতরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। এতেই বড় হয়ে যায় ঘটনাটি।

খবর পেয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আবাসিক হল থেকে বের হয়ে বিনোদপুর গেটের পাশে অবস্থান নেন। আর ব্যবসায়ীরা অবস্থান নেন রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কে বিনোদপুর বাজারে। এক পক্ষ আরেক পক্ষকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। এতে আহত হন অনেক শিক্ষার্থী। ব্যবসায়ীদের মধ্যেও আহত হন অন্তত ১০ জন।

আরও পড়ুন: রাবির ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা

এদিকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পুলিশ। তবে রাত ১০টার পর ফের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের বাইরে বেরিয়ে পড়েন। এসময় তারা বিক্ষোভ করেন।

সাখাওয়াত হোসেন/এমআরআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।