ইবিতে ছাত্রী নির্যাতন

অভিযুক্ত ৫ ছাত্রীর বিষয়ে সিদ্ধান্ত শনিবার

অভিযুক্ত পাঁচ ছাত্রী

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ফুলপরীকে নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত পাঁচ ছাত্রীর বহিষ্কারের বিষয়ে শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম।

বুধবার (১ মার্চ) উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্টকে প্রত্যাহার করেছি এবং হলের সিনিয়র হাউজ টিউটরকে সাময়িক হল চালানোর জন্য বলা হয়েছে। ভাইস চ্যান্সেলরের নির্দেশে এটা করা হয়েছে। তিনি ক্যাম্পাসে এলে প্রভোস্ট নিয়োগ দেওয়া হবে। এছাড়া অভিযুক্তদের বহিষ্কারের বিষয়ে শনিবার শৃঙ্খলা কমিটির মিটিংয়ে হাইকোর্টের নির্দেশনার ভিত্তিতেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন: ছাত্রলীগ নেত্রীসহ পাঁচজনের সিট বাতিল

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, আমি ক্যাম্পাসে না থাকায় উপ-উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছি। তাদের ফাইল রেডি করতে বলেছি। শনিবার তাদের বিষয়ে মিটিং করে সিদ্ধান্ত নেবো।

তিনি আরও বলেন, আমরা আরও আগেই এরকম একটা সিদ্ধান্ত নিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু অভিযোগটা উভয়পক্ষের হওয়ায় দেরি হয়েছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ড আমরা কোনোভাবেই প্রশ্রয় দেবো না।

এর আগে ফুলপরী খাতুনের ওপর নির্যাতনের সত্যতা খুঁজে পায় তদন্ত কমিটি। সেই প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে রায় দেন হাইকোর্টের বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ। আগামী ৮ মে‘র ভেতর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালামকে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন: ছাত্রলীগ নেত্রীসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করবেন ফুলপরী

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে গত ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি দুই দফায় ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ওই ছাত্রীকে রাতভর নির্যাতন করার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, ফিন্যান্স বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের তাবাসসুমসহ আরও সাত-আটজন জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ছাত্রী। ঘটনা তদন্তে হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এছাড়া ১৫ ফেব্রুয়ারি আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করে শাখা ছাত্রলীগ।

অন্যদিকে, ঘটনাটি নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন গত ১৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের নজরে আনেন আইনজীবী গাজী মো. মহসীন ও আজগর হোসেন তুহিন। তখন তাদের লিখিত আবেদন দিতে বলেন আদালত। সে অনুসারে তারা জনস্বার্থে রিট করেন।

গত ১৬ ফেব্রুয়ারি রিটের শুনানি শেষে একজন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও একজন প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তার সমন্বয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এছাড়া অভিযুক্তদের ক্যাম্পাসের বাইরে রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন: এবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হলে ছাত্রী নির্যাতন

এরই মাঝে গত ১৮, ২০ ও ২২ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন কমিটির ডাকে মোট তিনবার পৃথকভাবে ক্যাম্পাসে এসে সাক্ষাৎকার দেন ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তরা। গত রোববার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটি। পরে সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মনিরুজ্জামান মিল্টন হাইকোর্টে সেই প্রতিবেদন জমা দেন।

রুমি নোমান/এমআরআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।