হলের বারান্দা থেকে পড়ে নিহত রাবি ছাত্র শাহরিয়ারের জানাজা সম্পন্ন
হলের বারান্দা থেকে পড়ে নিহত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) মার্কেটিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী এম জি এম শাহরিয়ারের জানাজা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে সম্পন্ন হয়েছে। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকশো শিক্ষক-শিক্ষার্থী অংশ নেন।
বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) সকাল ৯টায় রাবির কেন্দ্রীয় মসজিদের প্রধান ইমাম ফাহিম মাহমুদের ইমামতিতে তার জানাজা সম্পন্ন হয়।
পরিবারের পক্ষ থেকে শাহরিয়ারের বড় ভাই গোলাম সরোয়ার বলেন, এই সময়ে একজন বড় ভাই হিসেবে ছোট ভাইয়ের জানাজায় দাঁড়ানো যে কতটা কষ্টের তা বলে বোঝানো যাবে না। আমাদের সবার জানা উচিত আমরা সবাই রাষ্ট্রের সম্পদ, তার থেকে বড় কথা আমরা পরিবারের সম্পদ। আমি জানি না এই কফিনের ওজন আমার পরিবার কেমন করে বহন করবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, একজন শিক্ষক ও বাবা হিসেবে এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হওয়াটা যে কতটা কষ্টের তা একজন বাবাই শুধু জানেন। আমি তার পরিবারের প্রধান হিসেবে আপনাদের কাছে অনুরোধ করছি সবাই তাকে ক্ষমা করে দেবেন। তার সঙ্গে আর্থিক দেনা-পাওনা থাকলে আমাকে জানাবেন, পরিশোধ করে দেবো। আমরা তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। সেই সঙ্গে তার শোকসন্তপ্ত পরিবারকে এই শোক সইবার তৌফিক দিন।
শাহরিয়ারের জানাজায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. সুলতান উল-ইসলাম, মার্কেটিং বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. ফরিদুল ইসলাম, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার ও নিহত শাহরিয়ারের সহপাঠীসহ প্রায় দুই হাজার শিক্ষক-শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
জানাজা শেষে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তারের নেতৃত্বে শাহরিয়ারের মরদেহ তার বড় ভাই শাকিলের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি বাসে করে শিক্ষার্থীরা মরদেহ নিয়ে শাহরিয়ারের গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরের উদ্দেশে রওয়ানা হন। সেখানে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
এদিকে, শাহরিয়ারে মৃত্যু শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়েছেন তার সহপাঠীরা। কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা গেছে অনেককে। তার আত্মীয়-স্বজনের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছিল মতিহারের সবুজ ক্যাম্পাস।
বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাবির হবিবুর রহমান হলের তৃতীয় তলার বারান্দা থেকে পড়ে যান শাহরিয়ার। শব্দ পাওয়ার পর কয়েকজন দেখতে পেয়ে তার কাছে ছুটে যান। ততক্ষণে তার মাথা ফেটে প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। পরে তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার কিছুক্ষণ পরেই কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মনির হোসেন মাহিন/এমআরআর/এএসএম