শারদোৎসবে মেতেছে ঢাবির চারুকলা
ঋতু পরিবর্তনের পালাক্রমে স্বচ্ছ নীল আকাশ ও কাশফুলের সম্মোহন নিয়ে বাংলার প্রতিকৃতিতে এসেছে শরৎ। শরৎকালকে বরণ করে নিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় শুরু হয়েছে শারদোৎসব-১৪২৯। সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর আয়োজনে এ অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করছে বাংলাদেশ সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়।
শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানের শুরুতে সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী দলগতভাবে নজরুল ও রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশন করেন। এরপর একে একে একক সংগীত উপহার দেন শিল্পী ফাহমি হোসেন, বিজন চন্দ্র মিস্ত্রী, বিমান চন্দ্র বিশ্বাস, অনিমা রায় ও আরিফ রহমান প্রমুখ।
সমবেত সংগীত পরিবেশনায় ছিলো সুর বিহার, বহ্নিশিখা, সুর নন্দন ইত্যাদি শিল্পীগোষ্ঠী। নির্মলেন্দু গুণের বহুল পঠিত কবিতা ‘কাশফুলের কাব্য’ আবৃত্তি করেন নায়লা তারান্নুম কাকলী। নৃত্য পরিবেশন করে নৃত্যাক্ষ, নৃত্যজন, ভাবনা নৃত্যদল।
প্রথম পর্বের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি সংক্ষিপ্ত পরিসরে ‘শরৎকথন’ অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে আমন্ত্রিত অতিথিরা শরৎকালসহ বাংলার প্রকৃতি সম্পর্কে তাদের ভাবনা তুলে ধরেন।
ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, শরৎকালের কতগুলো স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য রয়েছে। কবিদের লেখনি, ছোটগল্প, কবিতা এবং সংগীতে শরৎ ঋতু নানাভাবে এসেছে। এর প্রধান উপজীব্য হিসেবে কখনো আকাশ, কখনো প্রকৃতি, কখনো শিউলি, কখনো কাশফুলের বর্ণনায় শরৎ উদ্ভাসিত হয়েছে।
তিনি বলেন, এ ঋতুতে আসলেই সবাই একটি ভিন্ন ধরনের আমেজ উপভোগ করে। শরৎকালের আকাশ সুবিশাল এবং সুগভীর। প্রকৃতি থেকে আমাদের একটি শিক্ষা গ্রহণ করা প্রয়োজন। শরতের সুউচ্চ ও সুবিশাল আকাশ যেন আমাদের মনের উদারতাকে বৃদ্ধি করে। মনের উদারতা যদি বৃদ্ধি পায় তবে সে মানুষ হবে অনেক অসাম্প্রদায়িক এবং অনেক মানবিক।
পরিবেশের সংরক্ষণ না করলে শরৎকাল তার স্বচ্ছ নীল আকাশ, স্বতন্ত্রতা হারাবে উল্লেখ করে পবিবেশের যত্ন নেওয়ার প্রতিও জোর দেন ঢাবি উপাচার্য।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম খালিদ বলেন, বিভিন্নজন বিভিন্নভাবে বাংলার ছয় ঋতুকে সাজিয়েছেন। মূলত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভূমিকা এখানে সর্বোত্তম। সব ঋতুকে নিয়েই তিনি সৃষ্টির আনন্দে মেতেছেন।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে ঋতুর আবির্ভাবের অনুষ্ঠান শুরুতে করেছে ছায়ানট। পহেলা বৈশাখ উদযাপনের মধ্য দিয়ে তারা ঋতুকে আমন্ত্রণ জানানোর অনুষ্ঠান শুরু করেছিল। এখন সারাদেশে প্রত্যেক ঘরে ঘরে ধর্ম-বর্ণ-মত নির্বিশেষে প্রত্যেকে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করছে। জাতির পিতা পহেলা বৈশাখে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছিলেন।
আল-সাদী ভূঁইয়া/এমকেআর/জিকেএস