রাবি শিক্ষকের শার্টের কলার ধরে টানাহেঁচড়া করলেন ছাত্রলীগ নেতা

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: ০৬:১৬ পিএম, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) আন্তঃবিভাগ ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে শার্টের কলার ধরে এক শিক্ষককে হেনস্তা করার অভিযোগ উঠেছে আইবিএ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু সিনহা সৌমিকের বিরুদ্ধে।

রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের হবিবুর রহমান হল মাঠে ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট (আইবিএ) ও ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিভাগের আন্তঃবিভাগ ফুটবল খেলায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় সংঘর্ষে শিক্ষকসহ উভয়পক্ষের অনেকেই আহত হয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তঃবিভাগ ফুটবল খেলায় আইবিএ ও ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিভাগের মধ্যকার খেলা ড্র হয়। পরবর্তী সময়ে পেনাল্টি শটেও ২ গোলে ড্র হয়। এ সময় রেফারি উভয়পক্ষকে একটি করে অতিরিক্ত শট দেওয়ার অনুমতি দেন। তখন রেফারি বাঁশি বাজানোর আগেই ভেটেরিনারি বিভাগের এক শিক্ষার্থী শট দেন। সেটা আইবিএর গোলকিপার ঠেকিয়ে দেন। কিন্তু রেফারি পুনরায় শট নেওয়ার কথা বললে আইবিএ শিক্ষার্থীরা তার ওপর চড়াও হন।

jagonews24

একপর্যায়ে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটলে ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোইজুর রহমান কথা বলতে এগিয়ে যান। তখন আইবিএ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু সিনহা সৌমিক তার শার্টের কলার চেপে ধরেন এবং টেনেহিঁচড়ে অন্য পাশে নিয়ে যান। বিভাগের শিক্ষার্থী শাহেলাব হোসেন টুটুল, উৎপল, আবু নাঈম তন্ময়সহ এক ছাত্রী এর প্রতিবাদ জানালে তাদেরকেও সিনহার নেতৃত্বে মারধর ও হেনস্তা করা হয়। একপর্যায়ে শিক্ষক ও আহত শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে কৃষি অনুষদে নিয়ে যান সঙ্গে থাকা অন্য শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষকের গায়ে হাত তোলার ঘটনায় অভিযুক্ত আবু সিনহা সৌমিকসহ কয়েকজনের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিভাগের শিক্ষার্থীরা। দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদ ভবনে তালা লাগিয়ে তারা বিক্ষোভ করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা ও ছাত্র উপদেষ্টা তারেক নূর উপস্থিত হয়ে আশ্বস্ত করলে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত করেন।

অভিযোগের বিষয়ে আইবিএ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু সিনহা (সৌমিক) জাগো নিউজকে বলেন, ‘ওদেরকে মারধরের ঘটনা সম্পূর্ণ মিথ্যা। ওরাই আমাদেরকে মেরেছে। আমার শার্ট ছিঁড়ে ফেলেছে, গায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।’

ভুক্তভোগী ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিভাগের অধ্যাপক মোইজুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি ঝামেলা দেখে রেফারির কাছে সমাধানের জন্য গেলে সৌমিক আমার শার্টের কলার ধরে টানতে থাকে। আমি শিক্ষক পরিচয় দেওয়ার পরও কলার ছাড়েনি। পরে আমার বিভাগের কিছু শিক্ষার্থী ওদের হাত থেকে আমাকে মুক্ত করে।’

এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. আসাবুল হক জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে তারা প্রতিবেদন জমা দেবেন। এতে যারা অভিযুক্ত প্রমাণিত হবেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’

মনির হোসেন মাহিন/এসআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।