আটকে রেখে নির্যাতন

অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিলেন রাবি শিক্ষার্থী

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: ০৮:৪১ এএম, ২৭ আগস্ট ২০২২

চাঁদা আদায়ের লক্ষ্যে হলকক্ষে আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন এবং গলায় ছুরি ঠেকিয়ে ২০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সামসুল ইসলাম তার অভিযোগ তুলে নিয়েছেন।

বুধবার (২৩ আগস্ট) এই মর্মে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত আবেদন দিয়েছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অর্থনীতি বিভাগের এই শিক্ষার্থী।

লিখিত আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, গত ১৯ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের মতিহার হলের ২৩২ নম্বর কক্ষে হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর সাহা আমাকে ডেকে নিয়ে চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তিনি বিকাল ৩টা থেকে ৬টা পর্যন্ত আমাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন, আনুমানিক ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা আমার মানিব্যাগ থেকে ছিনিয়ে নেন। পরবর্তীতে তিনি আমার কাছে তার কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হন এবং ক্ষমা প্রার্থনা করেন। সেইসঙ্গে আমার আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে সম্মত হন। আমি মানবিক দিক বিবেচনা করে ক্ষমা করে দিয়েছি এবং তার বিরুদ্ধে এখন আমার আর কোনো অভিযোগ নাই। এমতাবস্থায় প্রক্টর এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে বিনীত আবেদন, আমার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা প্রদানের জন্য অনুরোধ করছি।

অভিযোগ তুলে নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সামসুল ইসলাম কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা পাশে ছিলেন আমার বিপদে। আশা করি ভবিষ্যতেও আমার পাশে থাকবেন। সার্বিক দিক বিবেচনা করেই আমি এ অভিযোগটি প্রত্যাহার করেছি। আমি এ বিষয়টি পুরোপুরি প্রশাসনের ওপর ছেড়ে দিয়েছি, যা করার প্রশাসন করবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, এ বিষয়ে আমাদের সংগঠন থেকে কিছু বলার নেই। এটা তাদের ব্যক্তিগত বিষয়। তারা দুজনে সেশনমেট এবং বন্ধু। যেহেতু তাদের মধ্যে সমাধান হয়েছে এ বিষয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। সমাধান হওয়ার পরেও যদি অভিযুক্তের বিষয়ে সত্যতা প্রমাণিত হয় তাহলে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবো।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, ভুক্তভোগী সামসুল গত ২৩ তারিখে অভিযোগ তুলে নিতে লিখিত আবেদন দিয়েছে। আমি আবেদনটি তদন্ত কমিটিকে দিয়েছি। হঠাৎ করেই কেন সে অভিযোগ তুলে নিতে আবেদন করলো সেই বিষয়টিও তদন্ত করে দেখা হবে।

গত ১৯ আগস্ট ভুক্তভোগী সামসুল ইসলামকে হলকক্ষে আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন এবং গলায় ছুরি ঠেকিয়ে ২০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি সাংবাদিক কিংবা পুলিশকে জানালে সামসুলকে বুয়েটের আবরার ফাহাদের মতো মেরে ফেলার হুমকি দেন অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা ভাস্কর সাহা। পরে নির্যাতনের ঘটনায় ভুক্তভোগী সেদিন সন্ধ্যায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

মনির হোসেন মাহিন/এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।