ইবি ছাত্রলীগের কমিটি
টপ টু নাকি সুপার ফাইভ?
দীর্ঘদিন পর কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। কেন্দ্র থেকে নতুন কমিটি আসছে এমন খবর তৎপর হয়েছেন নেতাকর্মীরা। কয় সদস্যবিশিষ্ট কমিটি হবে কিংবা কমিটিতে কারা থাকছেন তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে শাহিনুর রহমান শাহিনকে সভাপতি ও জুয়েল রানা হালিমকে সাধারণ সম্পাদক করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই সদস্যবিশিষ্ট ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। কিন্তু দুই বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও তারা পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করেননি।
পরে ২০১৯ সালে সম্মেলন ছাড়াই রবিউল ইসলাম পলাশ ও রাকিবুল ইসলাম রাকিব নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদ। এই কমিটির মেয়াদ প্রায় দুই বছর থাকলেও অর্থ লেনদেনসহ বেশকিছু অভিযোগে ক্যাম্পাসে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে পারেননি তারা। পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিতে ব্যর্থ হন তারাও।
দীর্ঘদিন পদশূন্য অবস্থায় থেকে মনঃক্ষুণ্ন হয়ে ক্যাম্পাস ছেড়েছেন ছাত্রলীগের অনেক ত্যাগী নেতাকর্মী। ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে দীর্ঘ সময় জড়িত থাকলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি না করায় হতাশ হন তারা।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সাবেক কর্মী মো. তাসনিম জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা ক্যাম্পাসে দীর্ঘদিন রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলাম। কিন্তু অনেক ত্যাগ তিতিক্ষার পরও কোনো পদ না পাওয়ায় খারাপ লাগা কাজ করে। তবে আগামী দিনে যাতে একটু বড় কমিটি বা সুপার কমিটি হয়, কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে সেই প্রত্যাশা থাকবে।’
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বলছেন, দুই সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণার ইতিহাস খুব একটা ভালো না। নেতারা দলীয় কার্যক্রম নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও প্রভাব হারানোর ভয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিতে চান না। আগের কমিটিগুলোতে এটাই দেখা গেছে।
ছাত্রলীগকর্মী মুজাহিদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে গুরুত্বপূর্ণ এই ইউনিটটি নেতৃত্বহীনতায় ভুগছে। ছাত্রলীগ করা অনেকেই কোনো রাজনৈতিক পরিচয় ছাড়াই বের হয়ে যাচ্ছেন ক্যাম্পাস থেকে। আমাদের একটাই চাওয়া দ্রুত কমিটি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতির গতিশীলতা ফিরে আসুক। সবাই রাজনীতি করার সুযোগ পাক।’
এবারের কমিটিতে পদপ্রত্যাশী হিসেবে মূল আলোচনায় রয়েছেন বেশ কয়েকজন ছাত্রনেতা। তারা হলেন সাবেক ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক মিজানুর রহমান লালন, সাবেক সহ-সম্পাদক ফয়সাল সিদ্দিক আরাফাত, সাবেক সদস্য তন্ময় সাহা টনি, সাবেক প্রচার সম্পাদক ফাহিমুর রহমান সেতু ও অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী নাসিম আহমেদ জয়।
কমিটিতে পদ পেলে মাদক, জঙ্গি ও দুর্নীতিমুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার প্রত্যয় নিয়ে কাজ করবেন বলে জানান ফয়সাল সিদ্দিক আরাফাত।
তন্ময় সাহা টনি বলেন, ‘আমাদের ইচ্ছা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় হবে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস। অর্থাৎ তাদের অধিকার আদায়ের পাশাপাশি প্রগতিশীলতা চর্চার জন্য আমরা কাজ করতে চাই।’
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সমাজসেবা সম্পাদক ও দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা শেখ স্বাধীন মো. শাহেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা একটু পর্যবেক্ষণের সময় নিয়েছি। কারণ ইবি ক্যাম্পাসে বেশ কিছু ঝামেলা ছিল। আমরা সুপারিশ করবো যেন একটি আংশিক কমিটি করা হয়। কারণ দীর্ঘদিন সেখানে পূর্ণাঙ্গ কমিটি নেই। তবে চেষ্টা থাকবে যেন আঞ্চলিক প্রভাবমুক্ত ও শিক্ষার্থীদের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি কমিটি হয়।’
এসআর/জিকেএস