শাবিতে ঘটনা ঘটিয়ে সেই শিক্ষক পলাতক


প্রকাশিত: ১২:২১ পিএম, ২৪ জানুয়ারি ২০১৬

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. আরিফুল ইসলামের প্রাইভেটকার চাপায় নিহত স্বজনদের কেউ এখনো মামলা করেনি। নিহতদের পক্ষ থেকে কোনো মামলা দায়ের করা না হলে পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা করা হবে বলে জানা গেছে।

এদিকে ঘটনার দিন থেকে অধ্যাপক আরিফুলের খোঁজ পাচ্ছেনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এদিকে এ ঘটনায় ক্যাম্পাসে নিন্দার ঝড় উঠেছে। ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি এবং নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের দাবি করেছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর সামিউল ইসলাম বলেন, ঘটনার পর পর স্পটে অধ্যাপক আরিফের সঙ্গে আমাদের দেখা হয়েছিল। এরপর থেকে প্রক্টরিয়াল বডির সঙ্গে কোনো যোগাযোগ হয়নি। তার মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে বলে সামিউল বলেন, আমি সকালে তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছি। কিন্তু তার মোবাইল বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করতে পারিনি।

ঘটনা দুপুরে ঘটলেও শনিবার দিবাগত রাত দশটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আমিনুল হক ভূঁইয়া, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ইলিয়াস উদ্দিন বিশ্বাস, প্রক্টর অধ্যাপক ড. কামরুজ্জামান চৌধুরীসহ বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষরা নগরীর মজুমদারীতে শোকসন্তপ্ত পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। এসময় তারা পরিবারের সদস্যদেরকে সমবেদনা জানান এবং যথাযথ সহযোগিতা করার আশ্বাস প্রদান করেন। তবে এর আগে ঘটনার পরপরই রাস্তায় পড়ে থাকা দুর্ঘটনার আলামত ধুয়ে মুছে সাফ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. কামরুজ্জামান বলেন, ঘটনার পরপরই পুলিশ আলামত জব্দ করেছে। পরে আমি হাসপাতালে চলে যাই। পুলিশের অনুপস্থিতিতে আলামত মুছে ফেলা হয়েছে কিনা বিষয়টি আমি জানি না।

সিলেট মহানগর পুলিশের জালালাবাদ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আক্তার হোসেন বলেন, এ পর্যন্ত নিহতের পক্ষ থেকে কোনো মামলা দায়ের হয়নি। তবে নিহতদের পরিবার যদি মামলা না করে সেক্ষেত্রে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

আহত রাহিবা রহমানের মামা মনজুর বলেন, রোববার বেলা ১১টায় সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে চাইলগাঁও ইউনিয়নের কাতিয়া গ্রামে তাদের দাফন সম্পন্ন হয়। এর আগে শনিবার রাতে নিহত শিক্ষক আতাউর রহমান ও গিয়াস উদ্দিনের লাশ কাতিয়া গ্রামে পৌঁছে।

মামলার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

সার্বিক বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আমিনুল হক ভূঁইয়া বলেন, আমরা ঘটনার দিন রাতে নিহত দুইজনের পরিবারকে সমবেদনা জানিয়েছি। ক্ষতিপূরণের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন এটি একটি প্রক্রিয়ার বিষয়। তবে ক্ষতিপূরণের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে বলে তিনি জানান।

উল্লেখ্য, গত শনিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কিলো রোডে শিক্ষক ড. আরিফুল ইসলামের ড্রাইভ করা গাড়ি চাপায় নিহত হন সুনামগঞ্জের ছাতক ডিগ্রি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক শেখ আতাউর রহমান (৫৫) ও তার চাচা মো. গিয়াস উদ্দিন (৭০)।

এ সময় আতাউর রহমানের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে নগরীর দ্বীপ শিখা স্কুলের ছাত্রী রাহিবা রহমান (১৪) গুরুতর আহত হন পাশাপাশি ড্রাইভিং সিটে বসা অধ্যাপক ড. মো. আরিফুল ইসলাম ও তার সহযোগি গাড়ির ড্রাইভার আবুল কালাম আজাদও আহত হন।

এমএএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।