পিটিয়ে স্টাম্প ভাঙলেন জাবি শিক্ষার্থী

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: ০৪:৪০ পিএম, ১৬ মে ২০২২
মারধরের শিকার সংগ্রাম ইসলাম (বাঁ থেকে) ও অভিযুক্ত আদনান শাকিল

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) গণিত বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে স্টাম্প দিয়ে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন বিভাগীয় শিক্ষার্থীরা। প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী।

ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর নাম সংগ্রাম ইসলাম। তিনি গণিত বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের (২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের) শিক্ষার্থী।

সোমবার (১৬ মে) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার সংলগ্ন সড়কে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন। এ সময় বক্তরা দোষীদের শাস্তির দাবি জানান।

মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী প্রসেনজিৎ কুমার জিৎ বলেন, ‘একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর কাছে সন্ত্রাসীর মতো এমন আচরণ কেউ প্রত্যাশা করে না। আমরা এই হামলা তীব্র প্রতিবাদ জানাই। প্রশাসনের কাছে এই ঘটনার বিচার চাই।’

গণিত বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী শিশির বলেন, ‘ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। একজন শিক্ষার্থী মারধরের শিকার হলো অথচ কেউ এগিয়ে এলো না। এমন ঘটনা খুবই ন্যাক্কারজনক। ঘটনায় দোষীদের আজীবন বহিষ্কারের দাবি জানাই যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন কাজ করতে সাহস না পান।’

jagonews24

এর আগে সকালে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

লিখিত অভিযোগে সংগ্রাম বলেন, বৃহস্পতিবার (১২ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে যাতায়াতকালে চালক আচমকা ব্রেক করলে আমি বাসের দরজার সঙ্গে ধাক্কা খাই। চালককে আচমকা ব্রেক করার কারণ জানতে চাইলে ভূতাত্ত্বিক বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আদনান শাকিল উগ্রভাবে বলেন, ‘হাত ছিল না তোর?’। আমি কথা শেষ করতে না করতেই তিনি আমাকে বলেন, ‘তোর ব্যাচ কত? তোর পরিচয় দে’। আমি বলি, ‘চালকের আমি কথা বলছি, আপনার সঙ্গে তো কিছু হয়নি। আপনাকে পরিচয় দেব কেন?।’ এ সময় তার সঙ্গে আরও দু-তিনজন এসে যুক্ত হন।

লিখিত অভিযোগে সংগ্রাম আরও উল্লেখ করেন, ‘তিনি (অভিযুক্ত) আমাকে বাস থেকে নামতে বললে আমি নেমে যাই। তারাও বাস থেকে নেমে আসেন। তখন আমি আমার পরিচয় দেই ও তার পরিচয় জানতে চাই। এ সময় কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে তিনি (শাকিল) আমার মাথায় উপর্যুপরি ঘুষি মারতে থাকেন। আমি প্রতিরোধ করতে গেলে তার সঙ্গে থাকা অজ্ঞাতপরিচয় দুজন আমার হাত আটকিয়ে ধরেন।

‘এরই মধ্যে আদনান শাকিল ক্রিকেট খেলার স্টাম্প দিয়ে আমার পায়ে ও পেছনে মারতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে স্টাম্পটি ভেঙে যায়। তাদের একজন রড নিয়ে মারতে এলে আমার এক বন্ধু আমাকে রক্ষা করেন। মারধরের পর তাদের একজন আমার ছবি তুলে নেন এবং ক্যাম্পাসে ফিরলে দেখে নেবেন বলে হুমকি দেন’, লিখিত বর্ণনায় উল্লেখ করেন সংগ্রাম।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান জাগো নিউজকে বলেন, ‘এর আগেও অভিযোগ পেয়েছি। আজকেও লিখিত অভিযোগ এসেছে। প্রক্টরিয়াল টিম বিষয়টি দেখছে।’

মারধরের বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী আদনান শাকিল জাগো নিউজকে বলেন, ‘তার আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে নিজেকে সংবরণ করতে না পেরে তাকে একটা থাপ্পড় মারি। আমার সঙ্গে থাকা লোকজন আমাকে আটকায়। তাকে স্টাম্প দিয়ে কে বা কারা মেরেছে জানি না। তাছাড়া টেকনিক্যাল সিগনালের মতো একটা জনবহুল জায়গায় স্টাম্প বা রড আসবে কোথ্থেকে। তার এ অভিযোগটি সম্পূর্ণ সাজানো।’

মাহবুব সরদার/এসআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।