র্যাগিংয়ের দায়ে সাজা পেলেন খুবির ৫ শিক্ষার্থী
আবাসিক হলে জুনিয়র শিক্ষার্থীদের রাতভর শারীরিক নির্যাতন ও উসকানি দেওয়ার অপরাধে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) ইংরেজি বিভাগের পাঁচ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক পরিচালক ও শৃঙ্খলা বোর্ডের সদস্য সচিব শরীফ হাসান লিমন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের নির্যাতন ও অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিকে দিয়ে মারধর করার অভিযোগে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মশিউর রহমান রাজা এবং রাজবর্মণ বিধানকে চূড়ান্ত পরীক্ষার ফলাফলের তারিখ থেকে ছয় মাস সার্টিফিকেট স্থগিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
একই বিভাগের মিনহাজ উর রহমান ও সাবেরুল বাশার নিরবকে ঘটনার সময় উপস্থিত থেকে নির্যাতনে পরস্পরকে উসকানি দেওয়ার অভিযোগে ছয় মাস সার্টিফিকেট স্থগিত করা হয়েছে। একই অভিযোগে আরেক শিক্ষার্থী ফাহাদ রহমান অঝোরকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, শাস্তির বিষয়ে নিয়মানুযায়ী একাডেমিক কাউন্সিলে আপিল করতে পারবেন সাজাপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা।
২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক পরিচালক ও শৃঙ্খলা বোর্ডের সদস্যসচিব শরীফ হাসান লিমন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে ওই পাঁচ শিক্ষার্থীর বিভিন্ন মেয়াদের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক পরিচালক ও শৃঙ্খলা বোর্ডের সদস্যসচিব অধ্যাপক মো. শরীফ হাসান লিমন বলেন, ‘গত বছর ৩১ ডিসেম্বর অভিযুক্ত পাঁচ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। শিক্ষার্থীরা আত্মপক্ষ সমর্থন করে যে জবাব দিয়েছিল তার পরিপ্রেক্ষিতে শৃঙ্খলা বোর্ড এ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
এ বিষয়ে সাজাপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী মশিউর রহমান রাজা বলেন, ‘আমাদের পাঁচজনকে যে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে এটা আমরা গতকাল জানতে পেরেছি। এখন তো সবাই ক্যাম্পাসে নাই, সবাই এলে আমরা একাডেমিক কাউন্সিলে আপিলের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব।’
আরেক সাজাপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী ফাহাদ রহমান অঝোর বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গৃহীত হয়েছে এটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। কারণ, আমি ঘটনার দিন উপস্থিত ছিলাম না। আর এরই মধ্যে হলের ইন্টারনাল তদন্তে আমি নিরপরাধ প্রমাণ হওয়ায় আমার হলের সিটও বাতিল করা হয়নি। আমি একাডেমিক কাউন্সিলে আপিল করব এবং আমি এর ন্যায়বিচার চাই।’
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২৭ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ইংরেজি বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে রাতভর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। নির্যাতিত শিক্ষার্থীরা বিচার চেয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গঠিত তদন্ত কমিটি এর সত্যতা পাওয়ায় শিক্ষার্থীদের এই শাস্তি প্রদান করেছে।
আলমগীর হান্নান/আরএইচ/জেআইএম