রাবির দুই ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অনুপস্থিত প্রায় ১৮ হাজার
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গত দুইদিনের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেননি প্রায় ১৮ হাজার শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতির হার বেশি হওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার (৪ অক্টোবর) শুরু হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা। প্রথমদিন অনুষ্ঠিত ‘সি’ ইউনিটের (বিজ্ঞান) বিভাগের পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিলেন ১০ হাজার ৭৪১ শিক্ষার্থী। যা এই ইউনিটের ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থীর ২৪ দশমিক ৩০ শতাংশ। ‘সি’ ইউনিটের মোট পরীক্ষার্থী ছিল ৪৪ হাজার ১৮৮ জন। এরমধ্যে ৩৩ হাজার ৪৪৭ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত হন। এ হিসেবে উপস্থিতির হার প্রায় ৭৫ শতাংশ।
অন্যদিকে ‘এ’ ইউনিট (কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান) অনুষদের পরীক্ষায় অনুপস্থিত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৭১৪০ জন। যা এই ইউনিটে ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থীর ১৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ। মোট ৪৩ হাজার ৫৫৮ শিক্ষার্থীর বিপরীতে এই ইউনিটে উপস্থিত হন ৩৬ হাজার ৪১৮ জন। উপস্থিতির হার ৮৩ দশমিক ৬১ শতাংশ।
এই হিসাবে দুইদিনে অনুপস্থিত মোট ১৭ হাজার ৮৮১ জন। যা এই দুই ইউনিটে ভর্তিচ্ছু মোট শিক্ষার্থীর প্রায় ২০ শতাংশ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো বন্ধ থাকা এবং রাজশাহীতে হোটেল ও মেসে পর্যাপ্ত সিট না পাওয়া যায়নি বলে এটিকে অনুপস্থিতির কারণ বলছেন অনেকে।
নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর অভিভাবক মানিক মিয়া জানান, রাজশাহীতে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন। কিন্তু মেয়েকে রাখতে পারলেও সে বাড়িতে মহিলা থাকায় তার জায়গা হয়নি। তাই তিনি রাস্তায় রাস্তায় এবং নদীর ধারে ঘুরে বেড়িয়ে রাতের সময় কাটিয়ে অবশেষে বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদে ঠাই নেন।
তিনি বলেন, ‘অনেকে ভোগান্তির কারণে নাও আসতে পারেন। তবে আমার মেয়ে যদি ভর্তির সুযোগ পায় তাহলেই আমার পরিশ্রম সার্থক হবে।’
‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কমিটির কো-অর্ডিনেটর ও কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ফজলুল হক জানান, মূলত তিনটি কারণে শিক্ষার্থীরা অনুপস্থিত হতে পারেন। একটি হলো মেডিকেলের ভর্তি পরীক্ষা, দ্বিতীয়টি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা এবং তৃতীয়টি হলো করোনার কারণে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষাবর্ষ কিছুটা এগিয়ে গেছে। যেসব শিক্ষার্থীর উদ্দেশ্য দেশের বাইরে যাওয়া তাদের অনেকে একটি ডিগ্রির জন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে বেছে নিচ্ছেন এমনটি হতে পারে। এছাড়া কিছু শিক্ষার্থী আছেন যাদের যথাযথ প্রস্তুতি ছিল না।
আবাসন সংকটের কারণে কেউ পরীক্ষা দিতে আসেনি বলে তিনি মনে করেন না। তিনি বলেন বলেন, ‘যাদের পরীক্ষা দেওয়ার ইচ্ছা ছিল তারা যেভাবে হোক পরীক্ষা কেন্দ্রে উপস্থিত হয়েছেন।’
সালমান শাকিল/এফআরএম/এমএস