জাবির ভূগোল বিভাগের ক্লাস-পরীক্ষা ১৭ দিন ধরে বন্ধ


প্রকাশিত: ০১:০৩ পিএম, ০২ ডিসেম্বর ২০১৫

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষকরা ১৭ দিন ধরে বিভাগের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রেখেছেন। এতে করে বিপাকে পড়েছেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। ক্লাস-পরীক্ষা চালুর দাবিতে বুধবার প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

বুধবার  দুপুর পৌনে ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালিত করে বিভাগের শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আশ্বাসে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে শিক্ষার্থীরা। দুপুর পৌনে ১২ টার দিকে বিভাগের বিভিন্ন আবর্তনের শিক্ষার্থীরা সমাজবিজ্ঞান ভবন থেকে একটি মিছিল নিয়ে এসে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। এসময় প্রশাসনিক ভবনের প্রধান ফটক বন্ধ করে দেয় তারা। ক্লাস-পরীক্ষা চালুর দাবিতে প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে থাকে। দাবি আদায় না হলে প্রশাসনিক কাযর্ক্রম করে দেওয়ার ঘোষণা দেয় তারা।

Jahangir-Nogor

পরে দুপুর ১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবুল হোসেনের আশ্বাসের ভিত্তিতে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে শিক্ষার্থীরা। গত সোমবারও একই দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে শিক্ষার্থীরা। সেদিনও প্রশাসনের আশ্বাসে ফিরে যায় তারা।

এর আগে গত ১৫ নভেম্বর নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করেন ওই বিভাগের শিক্ষকরা। বিভাগীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালে ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ৩৭তম আবর্তনের স্নাতকোত্তর চূড়ান্ত পরীক্ষায় অনিয়মসহ একাধিক কারণ দেখিয়ে অধ্যাপক মো. মনজুরুল হাসানকে বিভাগ থেকে বয়কট ঘোষণা করা হয়। পরে ওই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের সাথে নিয়ে বিচরণ করার অভিযোগ উঠে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে বিভাগীয় শিক্ষকদের নিরাপত্তা চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়।

লিখিত অভিযোগে প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে থানায় সাধারণ ডায়েরি করার জন্য ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেন শিক্ষকরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সাধারণ ডায়েরি না করায় ওইদিন সন্ধ্যায় বিভাগের শিক্ষকরা জরুরি সভায় ডেকে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন।

Jahangir-Nogor

এদিকে শিক্ষকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন আবদুল জব্বার হাওলাদারকে প্রধান করে একটি প্রাথমিক তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কমিটির অন্য দু’জন সদস্য হলেন গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. লায়েক সাজ্জাদ এন্দেল্লাহ ও ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মো. তাইবুল হাসান খান। এছাড়া সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো. আবু হাসান (কাউন্সিল/টিচিং)।

জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন আবদুল জব্বার হাওলাদার বলেন, মঙ্গলবার চিঠির মাধ্যমে তদন্ত কমিটির দায়িত্বের কথা জানতে পেরেছি। তবে কতদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে এমন বাধ্যবাধকতা চিঠিতে উল্লেখ নেই। গত সোমবার ক্লাস-পরীক্ষা চালুর অনুরোধ জানিয়ে বিভাগীয় শিক্ষকদের একটি চিঠি পাঠায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এরপর মঙ্গলবার একটি জরুরি সভায় প্রাথমিক তদন্তের প্রতিবেদন না আসা পর্য়ন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন বিভাগের শিক্ষকরা। মঙ্গলবার বিভাগের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে পাঠানো চিঠিতে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

এ বিষয়ে ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মো. সাজেদ আশরাফ করিম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রাথমিক তদন্ত কমিটি গঠন করে শিক্ষকদের ক্লাস-পরীক্ষা চালুর অনুরোধ জানিয়েছে। কিন্তু বিভাগীয় শিক্ষকরা এতে পুরোপুরি আশ্বস্ত হতে পারেনি বলে তারা ক্লাস-পরীক্ষা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত বহাল রেখেছেন।

Jahangir-Nogor

এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার আবু বকর সিদ্দিক বলেন, বহিরাগত ইস্যু নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষা নিতে বিভাগীয় শিক্ষকদের অনুরোধ করে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম বলেন, বিভাগীয় শিক্ষকদের সাথে কথা বলে অনতিবিলম্বে এ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে।
 
হাফিজুর রহমান/এসএইচএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।