খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ম সমাবর্তনের সকল প্রস্তুতি চূড়ান্ত
আগামী ২৫ নভেম্বর বুধবার অনুষ্ঠেয় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ম সমাবর্তন অনুষ্ঠানকে ঘিরে গোটা ক্যাম্পাসে সাজ সাজ রব। উৎসবমূখর ক্যাম্পাসে এখন চলছে চূড়ান্ত প্রস্তুতির ফিনিশিং টাচ।
আগামীকাল মঙ্গলবার ১২টায় সমাবর্তন মহড়া অনুষ্ঠিত হবে। ক্যাম্পাসে চলছে বিভিন্ন একাডেমিক ভবন, প্রশাসনিক ভবন, হলসমূহ, উপাচার্যের বাসভবনসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও অবকাঠামো অালোকসজ্জা। চার হাজারেরও বেশি অতিথি ধারণক্ষমতা সম্পন্ন বিশাল প্যান্ডেল ও মঞ্চ তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে।
ক্যাম্পাসের রাস্তায় চলছে আলপনার কাজ ও অন্যান্য সাজসজ্জা। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রপতিকে বরণ করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল সমাবর্তন অনুষ্ঠানস্থলসহ গোটা ক্যাম্পাসকে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ) অগ্রবর্তী দলের সদস্যদের সঙ্গে ক্যাম্পাসে সমাবর্তনের বিভিন্ন প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম ঘুরে দেখেন।
এদিকে সমাবর্তনের মূল অনুষ্ঠান সূচি অনুযায়ী খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন।
এছাড়া অনুষ্ঠানপূর্বে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্মিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের উদ্বোধনফলক উন্মোচন করবেন এবং সমাবর্তন অনুষ্ঠান সমাপ্তিলগ্নে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকার্যক্রমের ২৫ বছর পূর্তিতে রজত জয়ন্তীর বছরব্যাপী উৎসবের উদ্বোধন করবেন বলেও আশা করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর ইমেরিটাস ড. আনিসুজ্জামান এবং বিশেষ অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল মান্নান।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জনসহ গুরুত্বপূর্ণ দিক উল্লেখ করে বক্তব্য প্রদান করবেন। এছাড়া ধন্যবাদ জ্ঞাপন করবেন ট্রেজারার খান আতিয়ার রহমান।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী পরিষদের সদস্য, সংসদ সদস্যবৃন্দ, কূটনীতিক, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যবৃন্দ, বেসামরিক ও সামরিক প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধি, ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়ার প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।
২০১১ থেকে ২০১৫ সালের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত যে সমস্ত শিক্ষার্থীর চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে তারা এই ৫ম সমাবর্তনে অভিজ্ঞানপত্র (সনদপত্র) প্রাপ্ত হবেন। এর সংখ্যা প্রায় সাড়ে চার হাজার। তবে তাদের মধ্যে আড়াই হাজার গ্রাজুয়েট উপস্থিত থেকে রাষ্ট্রপতির কাছে সনদপত্র গ্রহণের জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছেন। এর মধ্যে ১৫ জনকে পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন আইটি (পিজিডিআইটি) ও একজনকে পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান করা হবে। পিএইচডি ডিগ্রি পাচ্ছেন মো. হাসানুজ্জামান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্কুলের (অনুষদ) পরীক্ষার ফলাফলে অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য এবার ১৪ জন শিক্ষার্থীকে গোল্ড মেডেল প্রদান করা হবে।
গোল্ড মেডেল প্রাপ্তরা হলেন:
বিজ্ঞান প্রকৌশল ও প্রযু্িক্তবিদ্যা স্কুলের- ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিসিপ্লিনের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের উজ্জ্বল বিশ্বাস, গণিত ডিসিপ্লিনের ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের রীনা পারভীন, গণিত ডিসিপ্লিনের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের আফরোজা পারভীন, পদার্থ বিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের মো. ইমরান হোসেন। জীববিজ্ঞান স্কুলের- ফিসারিজ অ্যান্ড মেরিন রিসোর্স টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের জয়ন্ত বীর, এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের শেখ মোজাম্মেল হোসেন, ফিসারিজ অ্যান্ড মেরিন রিসোর্স টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের শারমীন আক্তার, এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের জয়দেব গোমস্তা।
ব্যবস্থাপনা ও ব্যবসায় প্রশাসন স্কুলের-ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিনের ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের মো. রুবেল হাসান বাপ্পী, ২০১১-১২ শিক্ষবর্ষের জান্নাতুল ফেরদৌস বৃষ্টি, ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের মোহাইমিনুল ইসলাম।
সামাজিক বিজ্ঞান স্কুলের- অর্থনীতি ডিসিপ্লিনের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের অপূর্ব রায়, ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের নুসরাত জাহান।
চারুকলা ইনস্টিটিউটের- প্রিন্ট মেকিং ডিসিপ্লিনের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের লুৎফন্নাহার লিজা।
১৯৯০-৯১ শিক্ষাবর্ষ থেকে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে এর আগে ৪টি সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম সমাবর্তন ১৯৯৭ সালের ১০ এপ্রিল, দ্বিতীয় সমাবর্তন ২০০১ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি, তৃতীয় সমাবর্তন ২০০৭ সালের ১৯ মার্চ এবং ৪র্থ সমাবর্তন ২০১০ সালের ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয়।
আলমগীর হান্নান/এমএএস/পিআর