আনন্দ মিছিলে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের হাতাহাতি, আহত ১২
মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রীয় অতিথিদের আগমনকে স্বাগত জানিয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের আনন্দ মিছিল ও সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার নেতাকর্মীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১২ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
শুক্রবার (১৯ মার্চ) বিকেল সাড়ে চারটার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এই ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে বেশিরভাগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের অনুসারী। আহতদের কয়েকজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আনন্দ মিছিল ও সমাবেশ উপলক্ষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও রাজু ভাস্কর্য এলাকায় দুপুর থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা থেকে বাস-ট্রাকযোগে এসে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অবস্থান নেয়। শহীদ মিনার এলাকায় মাইকের মাধ্যমে দলীয় ও দেশাত্মবোধক গান বাজতে থাকে। একপর্যায়ে বিকাল চারটার দিকে মাইকে বাজানো গান বন্ধ করে স্লোগান দিতে থাকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের আহমেদের অনুসারীরা।
এ সময় ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের নির্দেশে তার দুই অনুসারী স্লোগান বন্ধ করে গান বাজাতে বলেন। কিন্তু জোবায়ের আহমেদের অনুসারী অস্বীকৃতি জানালে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে জুবায়েরের অনুসারীরা সাদ্দাম হোসেনের অনুসারীদের ওপর হামলা চালায়।
জুবায়ের নিজে ‘ফ্লাইং কিক’ দিয়ে তার নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন সাদ্দামের অনুসারীদের মারতে। মারধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ৮ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। এ সময় ঢাবি সাধারণ সম্পাদকের ওপর হামলা করতে এলে নেতাকর্মীরা সাদ্দাম হোসেনকে নিয়ে সেখান থেকে চলে আসেন।
এ বিষয়ে সাদ্দাম হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘তারা (মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গায়ে হাত তুলেছে। শহীদ মিনারের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করেছে তারা। সাউন্ড সিস্টেম ধ্বংস করেছে। তথা সাংগঠনিক নিয়ম লঙ্ঘন করেছে। আমরা কেন্দ্রকে বিষয়টি অবহিত করেছি। আশা করবো তারা দোষীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে।’
এদিকে এ বিষয়ে জুবায়ের আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘শহীদ মিনারে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলাম। নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করার জন্য আমরা পাঁচ মিনিট সাউন্ড বন্ধ করে স্লোগান দিতে চাচ্ছিলাম। সেজন্য সাউন্ড সিস্টেমের কাছে কয়েকজন নেতাকর্মী পাঠিয়েছিলাম। তখন সাদ্দামের ছেলেরা সাউন্ড বন্ধ করতে আমাদের বাঁধা দেয়। এমনকি আমি যাওয়ার পরও তারা আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় সাদ্দাম নিজে ইন্ধন দিয়ে আমাদের ওপর হামলা করেছেন। আমি পরিচয় দেয়ার পরও বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু নেতাকর্মী আমার ওপর হামলা করেছে। এতে আমার মুখ কেটে রক্ত বেরিয়েছে। এখন উল্টো সাদ্দাম মিথ্যাচার করছেন।’
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, ‘মারধরের ঘটনা ঘটেনি। শুনলাম কথা কাটাকাটি হয়েছে। তবে আমরা খোঁজ-খবর নিচ্ছি। কেউ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আল সাদী/এমএসএইচ/এএসএম