মিছিল থেকে গ্রেফতারদের মুক্তি দাবিতে সারাদেশে বিক্ষোভ বৃহস্পতিবার
কারাবন্দি অবস্থায় লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে রাজধানীর শাহবাগ এলাকায় মশাল মিছিল থেকে গ্রেফতার সাতজনের জামিন নামঞ্জুর করায় বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দিয়েছে বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলো।
বুধবার (৩ মার্চ) সন্ধ্যায় একই দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মশাল মিছিল করে বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর মোর্চা প্রগতিশীল ছাত্রজোট। মিছিল শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত এক সমাবেশে এ ঘোষণা দেয়া হয়।
মশাল মিছিলটি সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে শুরু হয়ে শামসুন নাহার হল, রোকেয়া হল, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা হয়ে শাহবাগ, কাটাবন মোড় প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এসে সমাপ্ত হয়।
সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক দীপক শীল বলেন, সরকারের কাছে দাবি করে কোনো লাভ হবে না। আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের মৌলিক অধিকার আমাদেরকেই নিশ্চিত করতে হবে। ২৫ তারিখ দিবাগত রাত থেকে আমাদের চলমান আন্দোলনের মধ্যে কার্টুনিস্ট কিশোরকে আজকে জামিন দিতে বাধ্য হয়েছে এই স্বৈরাচারী সরকার।
আটক ছাত্রনেতাদের জামিনের বিষয়ে তিনি অভিযোগ করে বলেন, আজকে আমাদের ছাত্রনেতাদের জামিনের শুনানি ছিল। আমরা সারাদিন কোর্টে অবস্থান করেছিলাম। কোর্টের শুনানি সাড়ে ১২টায় শুরু হয়ে ১টায় শেষ হলেও রায়ের কোনো আদেশ দিতে পারেননি বিচারক। সাড়ে তিনটার দিকে বলা হলো, জামিন নামঞ্জুর করা হলো। তাহলে এই দুই ঘণ্টা বিচারক সাহেব কী করলেন? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কিংবা প্রধানমন্ত্রীর হুকুম পায়নি বলে জামিন হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি আল কাদেরী জয় বলেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্র আজকে পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। রাষ্ট্রীয় হত্যাকাণ্ডের অংশ হিসেবে যেভাবে লেখক মুশকাতকেকে হত্যা করা হয়েছে, এর প্রতিবাদে আন্দোলনকারীদের আজকে জামিন দেয়া হয়নি। আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট কোনো অভিযোগ আনতে না পেরে পুলিশ একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা দেখেছি, এ দেশে খুনের মামলার যারা আসামি হয় তাদের জামিন হয়, এ দেশে যারা ধর্ষক হয় তাদের জামিন হয়, কিন্তু যারা ন্যায়ের পক্ষে থেকে আন্দোলন করে তাদের জামিন হয় না। এ থেকে প্রমাণ হয় এই সরকার খুনি, ধর্ষকদের সরকার। অবিলম্বে আটকদের মুক্তি না দেয়া হলে সারাদেশে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
বক্তারা বলেন, আমাদের দাবি ছিল তিনটা— অবিলম্বে লেখক মুশতাক হত্যার বিচার করতে হবে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে হবে এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে চলমান আন্দোলন থেকে আটকদের মুক্তির আন্দোলন। এরই অংশ হিসেবে আগামীকাল সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা করেন তারা।
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন ছাত্র ফেডারেশন সহ-সভাপতি রিতু হালদার, বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলনের সভাপতি আতিক অনিক, ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা মহানগর সংসদের সাবেক সভাপতি জহর লাল রায় জয়, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল সহ-সভাপতি সাইদুল হক নিশান, ছাত্র ফেডারেশন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জাহিদ সুজন, ছাত্রফ্রন্ট সভাপতি মাসুদ রানা প্রমুখ।
আল সাদী/এমএসএইচ/জিকেএস