হল না খুললে পরীক্ষা দেয়া সম্ভব নয় : প্রগতিশীল ছাত্র জোট
‘বিশ্ববিদ্যালয়ের হল না খুললে পরীক্ষা দেয়া সম্ভব নয়। আবাসন ব্যবস্থা না করা হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) কোনো পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে দেওয়া হবে না’ বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন প্রগতিশীল ছাত্র জোটের নেতারা।
শুক্রবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে প্রগতিশীল ছাত্র জোটের নেতাকর্মীরা ছাত্র সমাবেশ করেন। এ সময় তারা স্বাস্থ্যসেবা ও নিরাপদ আবাসন নিশ্চিত করে হল খুলে দেয়াসহ ৭ দফা দাবি উত্থাপন করেন।
সমাবেশে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ শাহরিয়ার বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশের কোনো জায়গায় স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। দেশে চাকরির পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে, রাজনৈতিক সভা সমাবেশ হচ্ছে। শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খুললেই করোনা হয়? এ থেকে বোঝা যায়, সরকার শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব নিতে চায় না। আওয়ামী লীগ সরকার এই দেশের শিক্ষার্থীদের ভয় পাচ্ছে। সে জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে চায় না। আমরা করোনাকালে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন রক্ষার জন্য সরকারকে দায়িত্ব নেয়ার আহ্বান জানাই।’
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের আরেক নেতা নাসির উদ্দিন প্রিন্স বলেন, ‘আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে কয়েক দফা স্মারকলিপি দিয়ে টিউশন ফি কমানোর দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু তারা কোন বাস্তবিক উদ্যোগ নেয়নি। স্কুল থেকে ‘এসাইনমেন্ট ফি’-এর নামে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় শুধু মাসে মাসে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ছুটি বর্ধিত করে। কিন্তু আমরা দেখতে পাই, হলে হলে ছাত্রলীগ রুম ভাড়া দেয়।’
হল না খুলে ডিসেম্বরের ২৬ তারিখ থেকে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্তের কারণে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানকে তিনি ‘দশ টাকার সিঙ্গাড়াওয়ালা উপাচার্য’ বলে মন্তব্য করেন।
তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে আসতে পারছে না। কিন্তু ক্যাম্পাসে আসছে সেশন চার্জ দেওয়ার জন্য, কোর্স ফি দেওয়ার জন্য, হলের টাকা দেয়ার জন্য। টাকা দিতে না পারলে জরিমানা করা হচ্ছে। সবকিছু বন্ধ। ডাকসু নির্বাচন বন্ধ, সিনেট বন্ধ, একাডেমিক কাজ বন্ধ। কিন্তু শিক্ষক সমিতির নির্বাচন বন্ধ নেই। এভাবে তারা লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করছে।’
সমাবেশে নেতারা আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করে পরীক্ষা গ্রহণ, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বেতন-ফি মওকুফ, অছাত্র ও সন্ত্রাসীদের বিতাড়ন ও গণরুম প্রথা বন্ধ করে স্বাস্থ্যসম্মত আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, সকল বাণিজ্যিক কোর্স বন্ধ করা, সভা সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার দাবি জানান।
আল-সাদী ভূঁইয়া/এমএইচআর/এমএস