সাংস্কৃতিক অঙ্গনে দ্যুতি ছড়াচ্ছে বুলবুল ললিতকলা একাডেমি
প্রতিষ্ঠার পর থেকে দেশীয় সংস্কৃতির বিকাশে দ্যুতি ছড়াচ্ছে বুলবুল ললিতকলা একাডেমি। ১৯৫৫ সালে রাজধানীর পুরান ঢাকার ঐতিহাসিক ওয়াইজ হাউজে বিখ্যাত নৃত্যশিল্পী বুলবুল চৌধুরীর নামে এটি প্রতিষ্ঠা করেন তার স্ত্রী বেগম আফরোজা বুলবুল। সংগঠনটি বুলবুল একাডেমি অব ফাইন আর্টস বা বাফা নামেই বেশি পরিচিত।
দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী এই প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠার পর কয়েক যুগ ধরে দেশীয় সংস্কৃতির চর্চা ও উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখে আসছে। সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে করেছে সমৃদ্ধ। বাফা’র ছায়াতলে এসে এদেশের বহু প্রথিতযশা শিল্পী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব দীক্ষা নিয়েছেন।
সাংস্কৃতিক এই প্রতিষ্ঠানটিতে যারা পদচিহ্ন দিয়ে গেছেন তাদের মধ্যে ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ, ওস্তাদ আয়াত উদ্দিন, ওস্তাদ গুল মুহাম্মদ খাঁ, আব্বাস উদ্দিন আহমেদ, কবি শহিদুল্লাহ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উল্লেখযোগ্য।
স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বুলবুল ললিতকলা একাডেমির বহু শিল্পী তাদের জীবন বাজি রেখে বাংলাদেশ বেতারের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া এই প্রতিষ্ঠানের অসংখ্য শিল্পী স্বাধীনতার পর থেকে দেশের নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও দেশীয় সংস্কৃতির লালন-পালন অব্যাহত রেখেছেন।
বর্তমানে বুলবুল ললিতকলা একাডেমির ৭টি বিভাগে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড শেখানো হয়। শিশুদের জন্য রয়েছে নাচ, গান, আর্ট ও চারুকলা বিভাগ। নৃত্য বিভাগের মধ্যে মণিপুরী নৃত্য, লোকনৃত্য, কথক নৃত্য শেখানো হয়। গান শেখানোর জন্য রয়েছে কণ্ঠ সঙ্গীত বিভাগ। বেহালা, তবলা, বাঁশি, হাওয়াইয়ান ও গিটার প্রশিক্ষণের জন্য রয়েছে যন্ত্রসংগীত বিভাগ। সবগুলো বিভাগের জন্য প্রশিক্ষক হিসেবে রয়েছেন দেশসেরা সঙ্গীত শিল্পী ও নাট্য শিল্পীরা।
বুলবুল একাডেমিতে বর্তমানে প্রায় সাত শতাধিক শিক্ষার্থী ও ২৫০ জন শিক্ষক রয়েছেন। প্রতিটি বিভাগে ৪ বছরের কোর্স রয়েছে।
বুলবুল ললিতকলা একাডেমির রেজিস্ট্রার সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মাসুদ করিম জাগো নিউজকে বলেন, ‘বুলবুল ললিতকলা একাডেমি সাংস্কৃতিক চর্চার এক বিশাল শিক্ষাকেন্দ্র। আমাদের একটাই উদ্দেশ্য, তরুণ প্রজন্মকে সংস্কৃতিমনা ও শিল্পানুরাগী করে গড়ে তোলা। আমাদের এই প্রতিষ্ঠান আগে থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সাংস্কৃতিক দল নিয়ে অনুষ্ঠান করে বাঙালি সংস্কৃতিকে বিশ্বের দরবারে উপস্থাপন করছে। এছাড়াও আমাদের অনেক শিক্ষার্থী বাংলাদেশের রেডিও ও টেলিভিশনে পারফরম্যান্স করে বেশ সুনাম কুড়িয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান সমাজে মানুষ সাংস্কৃতিক অঙ্গন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। শিল্পচর্চার জন্য যে আবেগ ও ধ্যান দরকার সেটি এখন আর মানুষের মাঝে নেই।’
এসএস/জেআইএম