জাবিতে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে জখম
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) মীর মোশাররফ হোসেন হলের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা রাতের আঁধারে নিজ সংগঠনের আরেক নেতাকে রামদা দিয়ে কুপিয়ে জখম করেছেন। এ ঘটনার বিচার চেয়ে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে ছাত্রলীগের নেতারা।
মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে মীর মোশাররফ হোসেন হলের হলের বি-ব্লকের ২৬০নং কক্ষে এ হামলার ঘটনা ঘটে। বুধবার বিকাল পাঁচটার দিকে তারা এ স্মারকলিপি জমা দেন।
জানা যায়, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ৩৮তম আবর্তনের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা আব্দুল্লাহ আল-মামুনের উপর হামলা চালান একই হলের জুনিয়র ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। রাত ১২টার দিকে শাখা ছাত্রলীগের উপ-তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আব্দুর রহিম জুয়েলের নেতৃত্বে তার অনুসারী ৮-৯ জন ছাত্রলীগ কর্মী মামুনের কক্ষে যান এবং তাকে হল ছাড়ার নির্দেশ দেন। বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে তারা লোহার রড়, পাইপ ও রামদা দিয়ে মামুনের উপর হামলা চালান। এসময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তাকে রামদা দিয়ে কুপিয়ে জখম করেন।
পরে আহত অবস্থায় মামুনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। এদিকে এ ঘটনার বিচার দাবিতে বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ওই হলের ছাত্রলীগের একাংশের নেতাকর্মীরা।
স্মারকলিপিতে তারা উল্লেখ করেন, মঙ্গলবার রাতে মীর মোশাররফ হোসেন হলের ছাত্রলীগ নেতা আব্দুল্লাহ আল-মামুনের উপর পরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অতর্কিতভাবে হামলা চালান একদল ছাত্রলীগ নেতাকর্মী। হামলাকারীরা হলেন, ছাত্রলীগের উপ-তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আব্দুর রহিম জুয়েল (জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ, ৪১তম ব্যাচ), রবিউল ইসলাম (নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা, ৪২তম ব্যাচ), বনি আলম (ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং, ৪১তম ব্যাচ), মো. বখতিয়ার রিফাত (আন্তর্জাতিক সর্ম্পক, ৪১তম ব্যাচ), দেবাশীষ বিশ্বাস (দর্শন, ৪১তম ব্যাচ), সৈয়দ লায়েব আলী (দর্শন, ৪৩তম ব্যাচ), আদনান সৌম্য (ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান, ৪২তম ব্যাচ), আজমাইন ফায়েক স্বপ্নীল (দর্শন, ৪৩তম ব্যাচ), আবু হাসান (পদার্থবিজ্ঞান, ৪২তম ব্যাচ)।
অভিযোগপত্রে আরো বলা হয়েছে, তারা চিহিৃত সন্ত্রাসী, একাধিক মামলার আসামি এবং চাঁদাবাজির মতো বহু বিষয়ে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। আমরা মীর মোশাররফ হোসেন হলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা অতি দ্রুত এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার এবং হলের নিরাপত্তা ও নিরাপদে হলে অবস্থানের নিশ্চয়তা চাই।
এছাড়া লিখিত অভিযোগে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তানভীর আহম্মেদ সোহাগ, সহ-সভাপতি রাহাত করিম, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মহিতোষ রায় টিটু ও উপ-সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক মো. বশিরুল হক উপাচার্যের কাছে সন্ত্রাসী হামলার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
এদিকে মারধরের কারণ জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের উপ-তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আব্দুর রহিম জুয়েল জাগো নিউজকে জানান, আমি হলে ছিলাম না। এ বিষয়ে কিছু জানি না।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহা জাগো নিউজকে বলেন, উপাচার্য অসুস্থ থাকায় আমি অভিযোগ পত্রটি গ্রহণ করেছি। তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আর শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুর রহমান জনি জাগো নিউজকে বলেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সত্যতার ভিত্তিতে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেব।
হাফিজুর রহমান/এমজেড