চবি ছাত্রলীগে আবারও সংঘর্ষ, আহত ৪
পূর্ব ঘটনার জের ধরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের দুই পক্ষে আবারও সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয়পক্ষের চার কর্মীর আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বিবাদমান দুটি পক্ষ হলো- কনকর্ড ও বিজয় গ্রুপ। বুধবার (৪ মার্চ) সন্ধ্যার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী, শাহ আমানত ও শাহজালাল হলের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের সাকিবুল হাসান, রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের নেজামুল করিম, বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের মো. রিফাত ও একই শিক্ষাবর্ষের ইসলাম শিক্ষা বিভাগের মো. ফুয়াদ। এদের মধ্যে নেজাম ও ফুয়াদের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অপর দুজনকে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার রাতে আলাওল হলের ২৩৪ নম্বর কক্ষ নিয়ে বিজয় গ্রুপের এক কর্মীর সঙ্গে কনকর্ডের কর্মী ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী বোরহানুল ইসলামের ঝামেলা হয়। এ ঘটনার মীমাংসা করতে গেলে হিসাববিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও বিজয় গ্রুপের কর্মী আবীর হাসান তাকে চড়-থাপ্পড় দেন। এ ঘটনার জেরে গতকাল রাতের ক্যাম্পাসে ট্রেন এলে জিরো পয়েন্টের কাছে আবীরকে পেয়ে মারধর করে বোরহান ও তার সহযোগীরা।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে দুই পক্ষে সংঘর্ষ বাঁধে। এ নিয়ে দিনভর ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করে। পরে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী হলের সামনে বিজয় গ্রুপ এবং শাহজালাল হলের সামনে কনকর্ড গ্রুপ অবস্থান নেয়। তাদের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
এদিকে বিজয় কর্মীদের ছোড়া ইটের আঘাতে কনকর্ড গ্রুপের এক কর্মী শাহ আমানত হলের উত্তর পাশের এলাকায় আহত হলে তার সঙ্গীরা তাকে শাহজালাল হলের ভেতরে নিয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে বিজয় গ্রুপের কর্মীরা কনকর্ডের কর্মীদের ওপর হামলা করে শাহজালাল হলের মধ্যে ঢুকে পড়ে। একপর্যায়ে শাহজালাল হলের গেট ও ভেতরে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় শাহজালাল হলে থাকা সিটি মেয়র আ জ ম নাসিরের অনুসারী উপ-গ্রুপগুলো এক হয়ে ধাওয়া করে বিজয়ের কর্মীদের। এর কিছুক্ষণ পর পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে একাধারে লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কনকর্ড গ্রুপের নেতা ও চবি ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি আব্দুল মালেক বলেন, গত পরশু বিজয় গ্রুপের কর্মীরা আলাওল হলে অতর্কিতভাবে আমাদের এক কর্মীর ওপর হামলা করে। পরে গতকাল স্টেশনে দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতি হয়। বিজয় গ্রুপ এ ঘটনার সুরাহা না করে উল্টা আমাদের ছেলেদের উসকানি দিতে থাকে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি। এই গ্রুপটিই (বিজয় গ্রুপ) বারবার বিভিন্ন গ্রুপের সাথে ঝামেলা করে বিশ্ববিদ্যালয় অস্থিতিশীল করে।
এদিকে এ অভিযোগ অস্বীকার করে বিজয় গ্রুপের নেতা ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াস বলেন, গতকাল সাধারণ সম্পাদকের প্রত্যক্ষ মদতে ও নির্দেশে তার স্বগোত্রীয় লোক আমার নিরীহ কর্মীদের একা পেয়ে জিরো পয়েন্টে হামলা করে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ না নেয়ায় আজকের এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা।
এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এস এম মনিরুল হাসান বলেন, এ ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের যে ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত আমরা তাই করব।
আবদুল্লাহ রাকীব/বিএ