চাকরি স্থায়ী নয়, নতুন নিয়োগে আগ্রহী রাবি প্রশাসন
মাস্টার রোল কর্মচারীদের নিয়োগে অগ্রাধিকার দেয়ার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা থাকলেও নিয়ম লঙ্ঘন করছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) প্রশাসন। তারা নতুন নিয়োগে আগ্রহী। রাজনৈতিক প্রভাব, তদবির ও প্রশাসনের সদিচ্ছার অভাবে চাকরি স্থায়ী হচ্ছে না বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে কর্মরত প্রায় ২৮০ জন মাস্টার রোল কর্মচারীর। পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে তাদের।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয় শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্বরে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন মাস্টার রোল কর্মচারী ঐক্য পরিষদের নেতারা। তারা অভিযোগ করেন, তাদের জন্য অর্থ বরাদ্দ হয়ে আছে তবুও বিমাতা সুলভ আচরণ করছে প্রশাসন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মাস্টার রোল কর্মচারী ঐক্য পরিষদের মুখপাত্র মাসুদুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অনুমোদিত ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) অর্গানোগ্রামে বাজেটপ্রাপ্ত হয়েও প্রশাসনের সদিচ্ছার অভাবে ও রাজনৈতিক কারণে প্রায় দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে ২৮০ জন কর্মচারী স্থায়ী নিয়োগ পায়নি। অন্যদিকে বিভিন্ন সময় সিন্ডিকেটে দেড় হাজারেরও বেশি জনবল নিয়োগ দিলেও চাকরি স্থায়ী হয়নি আমাদের।
তিনি আরও বলেন, ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমানের সভাপতিত্বে আইন পাস হয়। এতে স্থায়ী নিয়োগের ক্ষেত্রে বর্তমানে নিয়োগপ্রাপ্তদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে। সংশোধিত বাজেটে ইউজিসি আমাদের জন্য ১ কোটি ২ লাখ ৪১ হাজার ১০০ টাকা বরাদ্দ দিয়ে আসছেন। আমরা লক্ষ্য করেছি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল মাস্টার রোলের কর্মচারীদের ৮০% বকেয়া বেতন-ভাতাসহ চাকরি ইতোমধ্যই স্থায়ী করা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রলালয় যেহেতু সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইউজিসি মানতে বাধ্য। আমরা মনে করি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আইন লঙ্ঘন করেছে এবং আইনবিরোধী কাজ করে যাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দুই দফা দাবি পেশ করেন। তাদের দাবিগুলো হচ্ছে- বিশ্ববিদ্যালয় যোগদানের তারিখ থেকে তাদের চাকরি স্থায়ী করতে হবে এবং অবিলম্বে যাবতীয় বকেয়া বেতন-ভাতা এরিয়ার আকারে প্রদান করতে হবে।
দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দেন তারা। সংবাদ সম্মেলনে মাস্টার রোল কর্মচারী ঐক্য পরিষদের প্রায় শতাধিক কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ২৬ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচর্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেয় মাস্টার রোল কর্মচারী ঐক্য পরিষদ। বিষয়টি সুরাহার জন্য একইদিন সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯৭তম সিন্ডিকেটে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হলে আন্দোলন স্থগিত করা হয়। পরে কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে বিষয়টি সুরাহার জন্য সময় বেঁধে দেয়া হয়। কিন্তু সাত কার্যদিবসেও বিষয়টি সুরাহা করেনি প্রশাসন। দাবি আদায়ে টানা ১০ দিন আন্দোলন অব্যাহত রেখে সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন ঘেরাও করেন মাস্টার রোল কর্মচারীরা।
সালমান শাকিল/আরএআর/এমএস