যবিপ্রবিতে অর্ধশত শিক্ষার্থীকে জিম্মি করে অর্থ-বাণিজ্য
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থীকে জিম্মি করে অর্থ-বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা দেয়া সনদপত্র ও নম্বরপত্র সাময়িকভাবে ফেরত নিতে হলে সংশ্লিষ্ট বিভাগে আট হাজার টাকা করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
অর্থ নেয়া হলেও এর বিপরীতে কোনো রশিদ দেয়া হচ্ছে না। আর বিভাগে এই অর্থ-বাণিজ্যের বিষয়টি জানে না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও।
যবিপ্রবি সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সময় তাদের কাছ থেকে উচ্চ মাধ্যমিকের সনদ ও নম্বরপত্র জমা নেয়া হয়। এই সনদ ও নম্বরপত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগে জমা থাকে। এই শিক্ষার্থীদের অনেকে পরবর্তী বছর সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা পদে বা অন্য বিশ্ববিদ্যালয়েও আবেদন করে থাকেন। এসব ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে মনোনীত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা দেয়া সনদ ও নম্বরপত্র তাদের সাময়িকভাবে প্রয়োজন হয়। আর এই প্রয়োজনকে পুঁজি করেই অর্থ-বাণিজ্যে নেমেছে যবিপ্রবির কয়েকটি বিভাগ।
ঘটনার শিকার শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, যবিপ্রবির বিভিন্ন বিভাগের প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী তাদের সনদপত্র সাময়িক সময়ের জন্য উত্তোলনের আবেদন করেছেন। এদের কেউ কেউ ভর্তি বাতিল করে চলে যেতে চান। আবার কেউ আবেদনের সময়সীমার মধ্যে সনদপত্র পুনরায় জমা দিতে চান। তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে বিভাগগুলো আট হাজার টাকা করে গ্রহণ করছে। প্রয়োজন বিবেচনায় শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ বাধ্য হয়ে ওই টাকা দিয়ে সনদ উত্তোলন করছেন। কিন্তু এর বিপরীতে কোনো রশিদ দেয়া হচ্ছে না।
সূত্র আরও জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অর্থ বিষয়ক কোনো কমিটির সিদ্ধান্ত ছাড়াই বিভাগগুলো এ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। আর এজন্য একাডেমিক কমিটির দোহাই দেয়া হচ্ছে। কিন্তু এ কমিটির টাকা আদায় ফিস ধার্য করার কোনো এখতিয়ার নেই।
এ প্রসঙ্গে যবিপ্রবির জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মিজানুর রহমান জাগো নিউজকে জানিয়েছেন, কোনো শিক্ষার্থী সনদ উত্তোলনের জন্য আবেদন করলে তার কাছ থেকে আট হাজার টাকা নেয়া হচ্ছে। একামেডিক কমিটির সিদ্ধান্তে এ টাকা নেয়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি দাবি করেন, সনদ জমা দিলে ওই টাকা ফেরত দেয়া হবে।
এ প্রসঙ্গে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. আব্দুস সাত্তার জাগো নিউজকে জানান, বিভাগ থেকে এভাবে টাকা নেয়ার বিষয়টি তিনি অবগত নন। তবে যদি কোনো শিক্ষার্থী অভিযোগ করে থাকেন তাহলে তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন।
মিলন রহমান/এমজেড/আরআইপি